১৮ মাসেরও বেশি সময় পরে, সম্পূর্ণরূপে টিকাপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক ছাত্র-ছাত্রী এবং কিছু দক্ষ অভিবাসীরা আবারও কোন ব্যতিক্রম ছাড়াই অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করতে পারছে।
সিডনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আগমন হলটি আবারও আন্তর্জাতিক ছাত্র-ছাত্রীদের দ্বারা পূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সেই ছাত্রদের একজন হল জালবি ফ্লোরেস। ম্যানেজমেন্ট পড়তে অস্ট্রেলিয়ায় আসার জন্য তিনি প্রায় দুই বছর অপেক্ষা করেছেন।
তিনি বলছেন, এই প্রক্রিয়াটি ছিল খুবই চ্যালেঞ্জিং।
"আসলে এটা ছিল খুব কঠিন। কারণ প্রথম বছরে আমরা সত্যিই আশা করছিলাম যে আমরা প্রবেশ করতে পারব, তবে দুঃখের বিষয় যে মহামারীর কারণে কোয়ারেন্টিন বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু আজ এখন আমরা এখানে আছি।"
মিঃ ফ্লোরেস যখন তার ডিগ্রি শুরু করবেন, সেখানে ১৩০,০০০ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অস্ট্রেলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে তাদের পড়াশোনা শেষ করার জন্য অপেক্ষা করছে।
ক্যাটরিনা জ্যাকসন হলেন ইউনিভার্সিটিজ অস্ট্রেলিয়ার সিইও। তিনি বলছেন যে সীমান্ত বন্ধ হওয়ার ফলে উচ্চশিক্ষা খাতে প্রভাব পড়েছে।
"অস্ট্রেলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কঠিন সময় মোকাবেলা করার ক্ষমতা থাকলেও এটা সত্যি যে আমরা গত বছর ১.৮ বিলিয়ন ডলার হারিয়েছি, এর বড় অংশ সীমান্ত বন্ধের কারণে। আমাদের জন্য সমস্যা হল বিভিন্ন বর্ষে শিক্ষার্থীর ঘাটতি। তাই পূর্বাবস্থায় ফিরে আসতে সময় লাগবে।"
শিক্ষানীতি বিশেষজ্ঞ ডক্টর মেলিন্ডা হিলডব্র্যান্ডট বলেছেন, এর অর্থ হল, যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা অস্ট্রেলিয়ায় পড়ার পরিকল্পনা করেছিল তারা ইতিমধ্যে অন্য কোথাও চলে গিয়ে থাকবে।
"তিনি বলেন, যখন সীমানা খোলা ছিল, শিক্ষার্থীরা ভিসার আবেদন করতে পারত। এবং তাই অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে আমরা পিছিয়ে আছি কারণ আমাদের সীমানা কেবলমাত্র সেইসব শিক্ষার্থীদের জন্য পুনরায় খোলা হচ্ছে। মহামারী-পূর্ব বিশ্বে,শিক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়া ছিল আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম গন্তব্য।"
সীমান্ত বন্ধের কারণে আতিথেয়তা শিল্পও কর্মী এবং গ্রাহক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে।
কাউলুন স্টির ফ্রাই রেস্তোরাঁর মালিক হাউইন চুই বলেছেন যোগ্য ভিসাধারীদের ফিরে আসার বিষয়টি তিনি স্বাগত জানাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের প্রধানত চীন এবং হংকং থেকে ফিরে আসার বিষয়টি প্রকৃতপক্ষে আমাদের ব্যবসাগুলিকে পুনঃনির্মাণ করবে কারণ স্পষ্টতই তারা আমাদের বাজারের শেয়ারে একটি বড় ভূমিকা রাখে।
মাইগ্রেশন কনসালট্যান্ট জর্জ লম্বার্ড বলেছেন যে দক্ষ অভিবাসীদেরও স্বাগত জানানো হচ্ছে কারণ তাদের চাহিদা বেশি।
তিনি বলেন, আমরা অস্ট্রেলিয়ার একটি বিশাল শূন্যতা সম্পর্কে সচেতন। আমাদের এখানে অনেক দক্ষ কর্মী প্রয়োজন। এবং আমরা জানি যে অন্তত পঞ্চাশ হাজার অভিবাসী সেই চাহিদাগুলি পূরণ করতে অস্ট্রেলিয়ায় আসতে প্রস্তুত।
ভারতের একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার সেই দক্ষ অভিবাসীদের মধ্যে একজন।
তিনি বলছেন, সীমান্ত বন্ধের কারণে তার ক্যারিয়ারে প্রভাব পড়েছে।
"এই মহামারী কবে শেষ হবে তার অপেক্ষায় আছি, এটি ব্যক্তিগতভাবে আমাকে এবং আমার পরিবারকে প্রভাবিত করেছে।"
তার মতো অনেকেই আশা করছেন যে সীমান্ত পুনরায় চালু হলে তাদের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করতে এবং তাদের জীবন স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবে।
পুরো প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: https://www.sbs.com.au/language/bangla/program
আমাদেরকে অনুসরণ করুন ফেসবুকে।