অস্ট্রেলিয়ার ৩০তম প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন যে তার সরকার আরও একটি মেয়াদের দায়িত্ব পাওয়ার যোগ্য কারণ তাদের শক্তিশালী অর্থনৈতিক পরিকল্পনার কারণে দেশের অর্থনীতি অত্যন্ত ভালো অবস্থায় আছে।
স্কট মরিসন ২০০৭ সালে তার সংসদীয় কর্মজীবন শুরু করেন; ২০১৮ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন; এবং ২০১৯ সালের ফেডারেল নির্বাচনে কোয়ালিশনকে বিজয়ী করেন।
স্কট মরিসন নিউ সাউথ ওয়েলসের কুক ডিভিশনে প্রতিনিধিত্ব করে ২০০৭ সালে তার সংসদীয় কর্মজীবন শুরু করেন।
তবে তিনি প্রাথমিকভাবে প্রাক-নির্বাচনে হেরে যান মাইকেল টোওকের কাছে।
কিন্তু সেই ফলাফল লিবারেল স্টেট এক্সিকিউটিভদের দ্বারা উল্টে যায় এবং স্কট মরিসন পূর্বনির্বাচনে জয়লাভ করেন।
এপ্রিলের শুরুতে এক মিডিয়া সাক্ষাত্কারে, মাইকেল টোওকে দাবি করেছিলেন যে মি. মরিসন ২০০৭ সালে তাকে দুর্বল করতে তার লেবানিজ ঐতিহ্য ব্যবহার করেছিলেন।
তবে অভিযোগের জবাবে স্কট মরিসন এই দাবিকে আপত্তিকর বলে বর্ণনা করেন।
স্কট মরিসন বলেন: "এটা সম্পূর্ণ অসত্য, দূষিত এবং তিক্ত গালিগালাজ যা অত্যন্ত আপত্তিকর।"
২০১৩ সালে জোটের নির্বাচনে জয়লাভের পর স্কট মরিসন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবটের অধীনে ইমিগ্রেশন মিনিস্টার হন।
সেই ভূমিকায় থাকাকালীন তিনি অপারেশন সোভারেইন বর্ডার স্থাপন করেন, যা ছিল একটি কঠোর অভিবাসন নীতি এবং যার লক্ষ্য হচ্ছে আশ্রয়প্রার্থীদের নৌকায় অস্ট্রেলিয়ায় আসা বন্ধ করা।
এই নীতিতে টেম্পোরারি প্রটেকশন ভিসা, অফশোর প্রসেসিং এবং বোট টার্নব্যাক বা নৌকা ফিরিয়ে দেয়ার মত বিষয় জড়িত।
মি. মরিসন এরপর ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ট্রেজারার হিসাবেও কাজ করেছেন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে, ব্ল্যাক সামার বুশফায়ারের সময় স্কট মরিসন তার পরিবার নিয়ে দেশের বাইরে ছুটিতে যান।
সেসময় সিডনিতে হাওয়াই থেকে রেডিও টু-জি-বি-তে ফোনে কথা বলার সময় তিনি বলেছিলেন যে "আমি তো হোস পাইপ ধরব না, বন্ধু" - এটি তার রাজনৈতিক বিরোধীরা তার বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে।
এছাড়া ২০২১-এর জুলাই মাসে মি. মরিসন অস্ট্রেলিয়ার কোভিড -১৯ টিকা দেয়ার ধীর গতির জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন।
এদিকে বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট মহিলা লিবারেল পার্টি এমপি স্কট মরিসনকে 'বুলি' বা উৎপীড়ক হিসাবে বর্ণনা করেছেন, যার মধ্যে আছেন নিউ সাউথ ওয়েলসের উচ্চকক্ষের সদস্য ক্যাথরিন কিওসাক এবং দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করা সেনেটর কনসেটা ফিয়েররাভান্তি-ওয়েলস। তারা তাকে একজন স্বৈরাচারী এবং উৎপীড়ক হিসেবে বর্ণনা করে বলেছিলেন যে তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার উপযুক্ত নন।
নিউ সাউথ ওয়েলস লিবারেল সিনেটের টিকিট পেতে ব্যর্থ হওয়ার কয়েকদিন পর বাজেটের রাতে ওই সিনেটর মি. মরিসনের সমালোচনা করেছিলেন।
এই সমালোচনার প্রেক্ষিতে স্কট মরিসন এবিসিকে বলেছেন, "আমি বুঝতে পেরেছি যে কনি হতাশ, কারণ লিবারেল পার্টির সদস্যরা পরের নির্বাচনে সেনেটের জন্য আমাদের প্রার্থী বাছাই করেছেন, আর তাতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। তারা সেনেটর পেইন এবং সেনেটর মোলানকে বেছে নিয়েছেন।”
এদিকে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রাক্তন প্রিমিয়ার গ্ল্যাডিস বেরেজিকলিয়ানের কাছ থেকে পাঠানো কথিত টেক্সট মেসেজ ফাঁস করা হয়েছে, যেখানে স্কট মরিসনকে "ভয়ঙ্কর ব্যক্তি" হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যিনি অবিশ্বস্ত ছিলেন; একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিনিয়র মন্ত্রী তাকে একজন প্রতারক এবং সম্পূর্ণ সাইকো বলে বর্ণনা করেছেন; এবং উপ-প্রধানমন্ত্রী বার্নাবি জয়েস তাকে "ভন্ড এবং মিথ্যাবাদী" বলে অভিহিত করেছেন।
স্কট মরিসন এবিসিকে বলেছেন এই ধরনের সমালোচনা হতেই পারে।
তিনি বলেন,"প্রধানমন্ত্রী হিসাবে আপনি এমন সিদ্ধান্ত নেন যেগুলিতে সবাই সবসময় আপনার সাথে একমত হন না। কিন্তু তৎকালীন প্রিমিয়ার বেরেজিকলিয়ান এইসব ভেসে বেড়ানো গুজবের কোনটাই নিশ্চিত করেননি। কিন্তু এটা সত্য যে আমি এমন সিদ্ধান্ত নেব যা সবাই একমত হবে না এবং এতে তারা হতাশ হবে। কিন্তু আপনি যদি সবার কাছে ভালো থাকতে চান তাহলে একজন ভালো প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না।"
স্কাই নিউজে নেতাদের বিতর্কের সময় স্কট মরিসন ভোটারদের কাছে কোয়ালিসনের জন্য সমর্থন কামনা করে বলেন, এখন পরিবর্তনের সময় নয়।
প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: এসবিএস বাংলা
আমাদেরকে অনুসরণ করুন ফেসবুকে।