আন্তর্জাতিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবার পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া সরকার সম্প্রতি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু বিশেষ সুবিধা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট ভিসায় কী কী পরিবর্তন আনা হয়েছে তা নিয়ে এই সেটলমেন্ট গাইড প্রতিবেদন।
করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারীকালে অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক সীমান্ত বন্ধ ছিল। প্রায় দুই বছর পর সারা বিশ্বের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের পূণরায় স্বাগত জানাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। সীমান্ত উন্মুক্ত করা হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ সুযোগের ব্যবস্থাও করা হয়েছে, যেমন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসার ফি মওকুফ করা হয়েছে।
নতুন এসব বিধিবিধান নিয়ে অভিবাসন সংস্থা ‘দি মাইগ্রেশন’ এর মাইগ্রেশন এজেন্ট নাসির নাওয়াজ জানান,
চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি থেকে ১৯ মার্চের মধ্যে আগমনকারী আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদেরকে ভিসা আবেদনের খরচ ফেরত দেওয়া হবে।
মিস্টার নাসির আরও বলেন, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ এর মধ্যে শিক্ষার্থীরা ফি ফেরত পাওয়ার আবেদন করতে পারবেন। এই সময়কালের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় আসলে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা কোর্স শুরুর আগে থেকেই কাজ করার সুযোগ পাবেন।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারী আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নানানভাবে প্রভাব ফেলেছে। অনেকে দেশে নিজের বাড়িতে ফিরতে পারেননি, অনেকে কাজ বা আয়ের সুযোগ হারিয়েছেন।
মিস্টার নাসির জানান, আন্তর্জাতিক সীমান্ত বন্ধ থাকাকালে অনেকেরই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। শিক্ষার্থী এবং অস্থায়ী ভিসাধারী যারা অস্ট্রেলিয়ার বাইরে ছিলেন, তারা সেই সময়ে এদেশে ফেরার সুযোগ পাননি।
মেডিসিন ও সার্জারিতে চীন থেকে স্নাতক পাস করে অস্ট্রেলিয়ায় জনস্বাস্থ্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর পড়তে আসা ইমরান খান জানান, অতিমারীর সময়কালে অস্ট্রেলিয়ায় আসতে পারেননি বলে মার্চ ২০২২ পর্যন্ত তাকে তার কোর্স পেছাতে হয়েছে।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদেরকে কাজের সুযোগ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য ইমরান অস্ট্রেলিয়া সরকারের প্রশংসা করে বলেন, এখন শিক্ষার্থীরা কোর্স শুরুর আগেই কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে, এটা সরকারের ভাল উদ্যোগ।
অতিমারীর পূর্বে গ্রাজুয়েট ভিসা সাবক্লাস ৪৮৫ পেতে হলে আবেদনকারীকে ‘অন-ক্যাম্পাস’ অর্থাৎ স্বশরীরের শিক্ষাঙ্গনে অংশগ্রহণ ছিল বাধ্যতামূলক। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, যারা অস্ট্রেলিয়ার বাইরে অনলাইনে পড়ালেখা করেছেন, তারাও এদেশে গ্রাজুয়েট ভিসা পাওয়ার যোগ্য হবেন।
অনলাইন অধ্যয়নের ব্যাপ্তি বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে গ্রাজুয়েট ভিসার সুযোগও বিস্তৃত করা হয়েছে। আগে ব্যাচেলর বা মাস্টার্স কোর্সের ক্ষেত্রে দু বছরের জন্য ৪৮৫ ভিসা দেওয়া হত, সেটা বাড়িয়ে তিন বছর করা হয়েছে।
বর্তমানে জরুরী সেক্টরে কর্মরত স্টুডেন্ট ভিসাধারীরাই কেবল নির্দিষ্ট কর্মঘন্টার অতিরিক্ত কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। সরকার অস্থায়ী ভিত্তিতে সব সেক্টরের জন্য এই কর্মঘন্টার সীমা তুলে দেওয়ার চিন্তা করছে যা চলতি বছরের এপ্রিল নাগাদ চূড়ান্ত করা হবে।
মিস্টার নাসির মনে করেন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সুযোগ বা ছাড় দেওয়ার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোরও ফি কমানোর কথা ভাবা উচিৎ।
‘স্টেপ আপ’ প্রতিষ্ঠানের প্রধান মুজাম্মিল রিজওয়ান খান মনে করেন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদেরকে অন্যদেশের সাথে প্রতিযোগিতায় এদেশে আকর্ষণ করতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় ফি কমাতে হবে। ফি কমানো ছাড়াও স্কলারশিপ দেওয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদেরকে এদেশে পড়তে আকর্ষণ করা যায়।
করোণাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারীর কারণে ভ্রমণ আইনে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। সব ভ্রমণকারীদের ভ্রমণের স্থান— স্টেট এবং টেরিটোরির সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধিবিধান মানতে হবে। আরও জানতে ডিপার্টমেন্ট অফ হোম এফেয়ার্সের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন- covid19.homeaffairs.gov.au/international-students
পুরো প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
Follow SBS Bangla on FACEBOOK.
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: https://www.sbs.com.au/language/bangla/program
আমাদেরকে অনুসরণ করুন ফেসবুকে।