আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মারাত্মক দমন-পীড়নের বিষয়ে বিস্তারিত শুনানি শুরু করেছে। কিন্তু মিয়ানমারের সামরিক শাসকদের আইনজীবীরা রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নিপীড়ন ও গণহত্যার অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতে মামলাটি প্রত্যাহার করতে চান।
মিয়ানমারের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর এক বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে সেনাবাহিনী।
ক্ষমতা পরিবর্তনের আগে, আফ্রিকান দেশ গাম্বিয়া ২০১৯ সালে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সমর্থনে আদালতে মামলা দায়ের করে।
জাতিসংঘ এর আগে একটি সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছে কিন্তু মিয়ানমার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মিয়ানমারের একজন আইনজীবী স্টেফান তালমন আদালতে বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, "লিখিত পর্যবেক্ষণে গাম্বিয়া প্রমান করার অনেক চেষ্টা করেছে যে ৯ নং অনুচ্ছেদের (গণহত্যার অপরাধ প্রতিরোধ ও শাস্তি সংক্রান্ত কনভেনশন) অধীনে আদালতের এখতিয়ার রয়েছে। কিন্তু তারা এটা প্রমাণ করতে পারেনি যে এখানে কোন ব্যক্তির আইনি স্বার্থ রয়েছে।"
এদিকে তাদের প্রতিরক্ষা আইনজীবী ডঃ ক্রিস্টোফার স্টেকার যুক্তি দিচ্ছেন যে এই মামলায় আদালতের এখতিয়ার নেই।
তিনি বলেন, "আইন অনুসারে, একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার পক্ষে প্রক্সি আবেদনকারী হিসাবে একটি রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে আদালতে মামলা করা সম্ভব নয়। গাম্বিয়া সেই বিরোধের কোনও যথেষ্ট প্রমান দিতে পারেনি।"
তবে ইউরোপীয় রোহিঙ্গা কাউন্সিলের আম্বিয়া পারভিন বলেছেন যে তিনি প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে চান, জাতীয় ঐক্য সরকারের সদস্যরাই মিয়ানমারের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছে।
তিনি বলেন,"এটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং হতাশাজনক যে আইসিজে (আন্তর্জাতিক বিচার আদালত) অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে জান্তাকে (মিয়ানমারের বিচারিক প্রতিনিধি হিসাবে) অনুমোদন করেছে - এরাই অপরাধী যারা গণহত্যা পরিচালনা করেছিল - যদিও আমি জানি তারা মিয়ানমারের প্রকৃত কণ্ঠস্বর নয়।"
ক্ষমতাচ্যুত প্রশাসন ও জান্তা বিরোধীদের নিয়ে গঠিত হয়েছে জাতীয় ঐক্য সরকার।
সোমবার শুনানির আগে জাতীয় ঐক্য সরকারের সদস্যরা সামরিক শাসকদের প্রতিনিধি গ্রহণ না করার জন্য আদালতের প্রতি আহ্বান জানান।
মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রী কো কো হ্লাইং বলেছেন, সমস্যা সমাধানের জন্য তাদের প্রতিশ্রুতি রয়েছে।
তিনি বলেন, "মিয়ানমার যুক্তি হচ্ছে যে, এই আদালতের এখতিয়ার নেই এবং মামলাটি অগ্রহণযোগ্য এবং তার মানে এই যে গাম্বিয়ার মামলার বিরুদ্ধে মিয়ানমারের কোনো উত্তর দেয়ার কিছু নেই ।"
গাম্বিয়ার আইনজীবীরা শীঘ্রই তাদের প্রতিক্রিয়া জানাবেন। তবে সিদ্ধান্ত জানার আগে কয়েক মাস লাগতে পারে।
পুরো প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
Follow SBS Bangla on FACEBOOK.
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: https://www.sbs.com.au/language/bangla/program
আমাদেরকে অনুসরণ করুন ফেসবুকে।
আরও দেখুন: