স্থপতি ইফতেখার আব্দুল্লাহ তার স্থাপত্য কাজে পরিবেশ বান্ধব এবং সাশ্রয়ী স্ট্রাকচার ডিজাইন করে থাকেন।
ইফতেখার আবদুল্লাহ রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অফ আর্কিটেক্টস-এর একজন ফেলো এবং নিউ সাউথ ওয়েলস এবং এসিটি দু'জায়গাতেই একজন নিবন্ধিত স্থপতি।
তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বা বুয়েট থেকে আর্কিটেকচারে স্নাতক এবং সিডনি ইউনিভার্সিটি থেকে আরবান ডিজাইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
অস্ট্রেলিয়া এবং অন্যান্য স্থানে স্থাপত্য এবং নগর নকশা প্রণয়নে স্থপতি ইফতেখার আব্দুল্লাহর আছে ব্যাপক অভিজ্ঞতা। তার কাজে অগ্রাধিকার পায় পরিবেশ বান্ধব এবং সাশ্রয়ী স্ট্রাকচার ডিজাইন করা।
ইফতেখার আবদুল্লাহ অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি আর্কিটেক্টস (বিএএ)-এর সভাপতিও। তিনি কথা বলেছেন তার স্থাপত্য কর্মের বিষয়গুলো নিয়ে।
বিষয়টা কেন গুরুত্বপূর্ণ এবং কীভাবে এটা সম্ভব? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা প্রায় ৩০ বছর ধরে কাজ করছি এবং শুরু থেকেই পরিবেশ নিয়ে কাজ করছি।
বাংলাদেশে আমরা সীমিত সম্পদ নিয়ে কাজ করি, এবং দেশের অভিজ্ঞতা থেকেই আমরা রিসাইক্লিং করার চিন্তা করি।
"এজন্যে আমরা বেশ কিছু কাজ ধরে ধরে করার চেষ্টা করছিলাম, ....আমরা দেখেছি অস্ট্রেলিয়াতে যখন পুরোনো বাড়িগুলো ভেঙে ফেলা হয় তার প্রায় ৮০ ভাগ ম্যাটেরিয়ালই ব্যবহার করা হয় না, এবং সেগুলো ডেমোলিশন ইয়ার্ডে ফেলে দেয়া হয়, এর ফলে এগুলো খুব উচ্চহারে পরিবেশ দূষণ করে।"
সেই চিন্তা থেকেই পুরোনো বাড়িগুলোই সংস্কার করে সেগুলো নতুন রূপ দিয়ে তৈরী করেন মিঃ আব্দুল্লাহ।
তিনি বলেন, "এ ক্ষেত্রে আমাদের মূল উদ্দেশ্য থাকে জায়গাটাকে পুনরায় ব্যবহার করা,....কোন ক্ষেত্রে ছোট বাড়িকে বড় করা কিংবা বড় বাড়িকে ছোট করে তার কিছু অংশ ভাড়া দেয়ার উপযুক্ত করে গড়ে তোলা।"
এর ফলে বাজেটেরও সাশ্রয় হচ্ছে এবং এতে বেশ সাফল্যও পেয়েছেন বলে জানান মিঃ আব্দুল্লাহ।
বাড়ি বানাতে গিয়ে অনেক সময়েই লোকজন দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। এ বিষয়ে তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, জায়গা কেনার আগে তাদের জানা উচিত ওই এলাকায় আপনি কেন কিনছেন, দাম কত, বাড়িটা কিভাবে তৈরী হবে ইত্যাদি।
দ্বিতীয়ত, তিনি আর্কিটেক্ট, ইঞ্জিনিয়ারদের মত পেশাদার ব্যক্তিদের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন বিল্ডারদের সাথে কথা বলার আগেই।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একজন আর্কিটেক্ট বা ইঞ্জিনিয়ার তাদের ক্লায়েন্টের স্বার্থেই কথা বলেন। কিন্তু বিল্ডারদের কাছ থেকে সেরকম কোন পরামর্শ নাও আসতে পারে, কারণ এখানে বেশ বড় ধরণের আর্থিক বিনিয়োগের বিষয়টি যুক্ত।
স্থপতি ইফতেখার আব্দুল্লাহ মর্যাদাপূর্ণ রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অফ আর্কিটেক্টস-এর একজন ফেলো। এই ফেলোশিপটি অস্ট্রেলিয়ার স্থপতিদের জন্য শীর্ষ পর্যায়ের সম্মাননা।
দীর্ঘদিন এই পেশায় সুনামের সাথে কাজ করা, পরিবেশ-বান্ধব স্থাপত্য, এবং স্থাপত্য-কর্মে কোন অ্যাওয়ার্ড পাওয়া - এর উপর ভিত্তি করেই এই সম্মাননা দেয়া হয়। এজন্য যেসব প্রয়োজনীয় যোগ্যতা পূরণ করতে হয় তা গত কয়েক বছর আগেই তিনি অর্জন করেছেন বলে জানান মিঃ আব্দুল্লাহ।
একটি দেশের অর্থনীতির উত্থান-পতনের সাথে স্থাপত্য পেশার সরাসরি যোগাযোগ থাকায় এতে কিছু চ্যালেঞ্জ থাকে। তবে এটি একটি 'অসাধারণ সাবজেক্ট' বলে মনে করেন মিঃ আব্দুল্লাহ।
তিনি বলেন, "এখানে সাহিত্য, দর্শন, সংগীত, লজিক, মনোবিজ্ঞান, সমাজ-বিজ্ঞান, একাউন্টিং, ম্যানেজমেন্ট, ইংরেজি ভাষা ইত্যাদি সবকিছুই আপনাকে পড়ানো হবে।"
"এটি পেশা হিসেবে অদ্বিতীয়, যারা এই পেশায় আসতে আগ্রহী আমি তাদের সবসময়েই স্বাগত জানাই।"
স্থপতি ইফতেখার আব্দুল্লাহর পুরো সাক্ষাৎকারটি শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
Follow SBS Bangla on FACEBOOK.
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: https://www.sbs.com.au/language/bangla/program
আমাদেরকে অনুসরণ করুন ফেসবুকে।
আরও দেখুন: