প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাতকালে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার সুসান রাইল বলেন, “ভিসার আবেদন এখন অনলাইনে করা যাবে।”
বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এ খবর জানা যায়।
অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার সুসান রাইল আরও জানান, বর্তমানে ৬৫ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন, যার মধ্যে ১৪ হাজারের মতো শিক্ষার্থী রয়েছেন।
সাক্ষাৎকালে দু’পক্ষের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা হয়।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস বলেন, “অস্থির সময় পেরিয়ে আমরা এখন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।”
তিনি জানান, তার নেতৃত্বাধীন সরকার সাংবিধানিক, বিচারিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, “এই সংস্কারসমূহ বাংলাদেশের ভবিষ্যতের ভিত্তি গঠনে সহায়ক হবে। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক রূপান্তর নিশ্চিত করতে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছি। আগামী মাসে ঐতিহাসিক জুলাই আন্দোলনের বার্ষিকীতে ‘জুলাই সনদ’ প্রকাশ করা হবে।”
শান্তিতে নোবেল জয়ী প্রফেসর ইউনূস গত বছরের ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ইউনূস বলেন, “এটি হবে বহু বছর পর এমন একটি নির্বাচন যেখানে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে প্রথমবারের ভোটাররা, স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবে। আমি মনে করি এটি হবে এক উৎসবমুখর ও আশাব্যঞ্জক দিন।”
নির্বাচনী সহায়তা হিসেবে অস্ট্রেলিয়া জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (UNDP) মাধ্যমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক, কারিগরি ও পরিচালনাগত সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ২০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার সহায়তার ঘোষণা দেয়।
বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে সুসান রাইল জানান, “দুই দেশের মধ্যে বার্ষিক ১৬.২ শতাংশ হারে বাণিজ্য বেড়ে বর্তমানে ৫ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারে পৌঁছেছে।”
তিনি আরও বলেন, “অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস প্রোগ্রামের মাধ্যমে ৩,০০০-এরও বেশি বাংলাদেশি অ্যালামনাই গড়ে উঠেছে, যারা বাংলাদেশের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।”
প্রফেসর ইউনূস অস্ট্রেলিয়াকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আরও বেশি বৃত্তি প্রদানের আহ্বান জানান।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশে অবস্থানরত প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার জন্য মানবিক সহায়তা বাড়ানো এখন অত্যন্ত জরুরি।”
জবাবে হাইকমিশনার রাইল জানান, “সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া ৯.৬ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার অতিরিক্ত মানবিক সহায়তা দিয়েছে, যা ২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গা ও তাদের আশ্রয়দানকারী সম্প্রদায়ের জন্য মোট সহায়তা ৫৫৩.৬ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারে উন্নীত করেছে।”
তিনি আশ্বাস দেন, “মিয়ানমারে নিরাপদ, স্বেচ্ছামূলক ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের পরিবেশ তৈরি হলে অস্ট্রেলিয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশকে সবধরনের সহায়তা দিয়ে যাবে।”
সাক্ষাৎ শেষে সুসান রাইল বলেন, “বাংলাদেশে আমার এই নতুন দায়িত্ব নিয়ে আমি অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত। বহুদিন ধরেই বাংলাদেশের প্রাণবন্ত সংস্কৃতি ও গতিশীল রাজনীতি আমাকে মুগ্ধ করে এসেছে।”
এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব ও এসডিজি কো-অর্ডিনেটর লামিয়া মোর্শেদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় উইংয়ের মহাপরিচালক মোহাম্মদ নূরে আলম।
এসবিএস বাংলা এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেলের অংশ।
এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুন প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে। এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে। ভিজিট করুন www.sbs.com.au/bangla.
আর, এসবিএস বাংলার পডকাস্ট এবং ভিডিওগুলো ইউটিউবেও পাবেন। ইউটিউবে সাবসক্রাইব করুন এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেল। উপভোগ করুন দক্ষিণ এশীয় ১০টি ভাষায় নানা অনুষ্ঠান। আরও রয়েছে ইংরেজি ভাষায় এসবিএস স্পাইস।