প্রথম ধাপে, কনটেনমেন্ট জোনের বাইরে, ৮ জুন থেকে খোলা যাবে ধর্মীয় স্থান, বেসরকারি অফিস, হোটেল-রেস্তরাঁ, শপিং মল। তবে সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলতে হবে কঠোর ভাবে।দ্বিতীয় ধাপে খোলা যাবে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, কোচিং সেন্টার। তবে রাজ্য সরকারকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কর্তৃপক্ষ এবং অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে। তার পর জুলাই মাসে এই সব প্রতিষ্ঠান খোলা যেতে পারে।কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নয়া নির্দেশিকা অনুসারে, স্বাস্থ্য মন্ত্রক স্ট্যান্ডার্ড অপারেশন প্রসিডিওর তৈরি করে দেবে।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজারের গণ্ডি টপকে গেল। গত ২৪ ঘণ্টাতে রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩১৭ জন। বৃহ্স্পতিবার যে সংখ্যাটা ছিল ৩৪৪। শুক্রবার তা তুলনামূলক কমেছিল। কিন্তু এদিন ফের বাড়ল সংখ্যাটা। যার জেরে রাজ্যে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে হল ৫ হাজার ১৩০। যার মধ্যে অ্যাকটিভ কেস ২ হাজার ৮৫১। করোনা হটস্পট এলাকা থেকে রাজ্যে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন পাঠানোর পর থেকেই বাড়ছে সংক্রমণ। যে কারণে বারবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়ি ফেরার পর থেকেই যে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে, তা বেশ স্পষ্ট। ২৪ ঘণ্টায় করোনার মারা গেল আরও ৭ জন। এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৩৭ জন।এদিকে, ভারতে করোনা সংক্রমণের গতি ক্রমশ বাড়ছে।কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৯৬৪ জন। মৃত্যু হয়েছে ২৫৬ জনের।
এখনও পর্যন্ত ভারতে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৭৩ হাজার ৭৬২ জন।এদের মধ্যে সক্রিয় আক্রান্ত ৮৬ হাজার ৪২২ জন, সুস্থ হয়েছেন ৮২ হাজার ৩৭০ জন। মৃত্যুর সংখ্যা ৪ হাজার ৯৭১ জন।মহারাষ্ট্রে এখনও আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সেখানে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৯৮ জনের।মুম্বইয়ের অবস্থা খুবই খারাপ,সেখানেই আক্রান্ত ৩৭ হাজার। মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ১৭০ জনের। বাণিজ্য নগরীর কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হল এশিয়ার সবচেয়ে বড় ধারাভি বস্তি।
অন্যদিকে এখনও সংক্রমণের শিখরে পৌঁছায়নি ,লকডাউনের চতুর্থ দফা শেষ হলে জুনের গোড়া থেকে করোনা আরও ভয়ংকর রূপ দেখাবে। আশঙ্কা রয়েছে গোষ্ঠী সংক্রমণেরও। দেখতে দেখতে অর্ধেক ভারতকে গ্রাস করবে এই মারণ ভাইরাস। আর সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, ৯০ শতাংশ মানুষ বুঝতেও পারবেন না যে তাঁরা করোনায় আক্রান্ত! এমনই আশঙ্কার কথা শুনিয়েছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেল্থ অ্যান্ড নিউরো সায়েন্সের নিউরোবিরোলজির প্রধান তথা কর্ণাটক হেল্থ টাস্ক ফোর্সের নোডাল আধিকারিক ভি রবি।
১ জুন থেকে এ রাজ্যে অনেকটাই শিথিল হচ্ছে লকডাউন।নিয়মবিধি মেনেই রাজ্যকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরানোর চেষ্টা চলবে।আর এতেই লুকিয়ে সংক্রমণের বীজ,এমনটাই মত ভি রবির।তিনি বলেছেন,ভারত এখনও সংক্রমণের তীব্রতা টের পায়নি। জুনের পর থেকে হু হু করে বাড়বে সংখ্যাটা। শুরু হবে গোষ্ঠী সংক্রমণও।
তাঁর দাবি, মধ্য ডিসেম্বরের মধ্যেই ভারতের ৫০ শতাংশ নাগরিক করোনার কবলে পড়বে।কিন্তু উপসর্গ না থাকায় শতাংশ মানুষ বুঝতেই পারবে না যে তাদের শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণ ভাইরাস।তবে এক্ষেত্রে মাত্র ৫ শতাংশ রোগীকেই হয়তো ভেন্টিলেশনে রাখার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু রবির মতে, মৃত্যুর হার তুলনামূলক কমই থাকবে,৩ থেকে ৪ শতাংশ।তবে গুজরাটে এর হার ৬ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।