তাবলীগ জমায়েতে অংশ নেয়া কিছু মানুষ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে যান,ফলে করোনা ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা বাড়ে বলে ধারণা করা হচ্ছে ।গত তিনদিনে মার্কাজ নিজামুদ্দিন থেকে ২হাজার জনেরও বেশি মানুষকে বের করে দেওয়া হয় বলে খবর।এর মধ্যেই বড়সড় অভিযান চালানো হয়েছে দিল্লির মরকজ নিজামউদ্দিনে।জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের নেতৃত্বে দিল্লি পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিল করে দিয়েছে বড় এলাকা।
দিল্লির নিজামুদ্দিনের যে ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে ব্যাপক হারে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে, সেখানে অংশ নিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গেরও বেশ কয়েকজন মানুষ।তাঁদের মধ্যে অনেকেই নিজের থেকে জানিয়েছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তিনি বলেছেন,নিজামুদ্দিনে যোগ দেওয়া ৫৪ জনকে হোম কোয়ারানটিনে পাঠানো হয়েছে।শুধু তাই নয়, ওই ৫৪ জনের মধ্যে ৪০ জন বিদেশি।যাঁরা মায়ানমার, থাইল্যান্ড থেকে এসেছিল।তবে,ইতিমধ্যে গোটা ঘটনাটিকে রাজনৈতিক দিকে ঘোরানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।নিজামুদ্দিনের ঘটনাকে করোনা সন্ত্রাস, সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, পুরো দেশে সন্ত্রাস ছড়ানোর চেষ্টা বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপি নেতারা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন,এই সংকটের সময়ে জাতপাতের রাজনীতি করবেন না! জাতের নামে বজ্জাতি করবেন না।
তাঁর কথায়, নিজামুদ্দিনের ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের ৭১ জন রয়েছে বলে কেন্দ্র জানিয়েছে।এদের ৫৪ জন যোগাযোগ করেছিল।তাদের মধ্যে ৪০ জন বিদেশি।মায়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ার মানুষ।এঁদের কোয়ারানটিনে পাঠানো হয়েছে।উত্তর দিনাজপুর, বাঁকুড়া,মগরাহাটের কয়েক জনের সন্ধান মিলেছে।আশা করছেন,তাঁরা নিজেরাই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। এদের আরও ৩০ জনকে কোয়ারানটিনে পাঠানো হবে। তবে,কেন্দ্রের দিকে অভিযোগের সুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন,যে সময় নিজামুদ্দিনে ওই অনুষ্ঠান চলছিল,সে সময় চিঠি দিয়ে বলা হয়েছিল,দেশে এমিডেমিকের মতো অবস্থা নেই করোনার জন্য।আক্ষেপের সুরে মমতা বলেছেন,আগে জানলে ভাল হত। দেরিতে জেনেছেন।শুধু তাই নয়, নিজামুদ্দিনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সচিবালয় নবান্ন থেকে বেরিয়ে কলকাতা পুলিশের সদর দপ্তর লালবাজারে গিয়ে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।সেখানে পুলিশ কমিশনার-সহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।সেই বৈঠকেই নিজামুদ্দিনের ঘটনা নিয়ে আলোচনা হয়।
ধর্মীয় সংগঠন তাবলীগ জামাতের হেডকোয়ার্টার দিল্লির নিজামউদ্দিনে। ১৩ থেকে ১৫ মার্চ সেখানে তাবলীগ জামাতের একটি ধর্মীয় সমাবেশ হয়।যেখানে সব রকম সামাজিক দূরত্বের বিধি নিষেধ উড়িয়ে একসঙ্গে বাস করছিলেন কয়েকশো মানুষ।এমনকি মালয়েশিয়া,ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, মায়ানমারের মতো দেশ থেকেও অনেকে অংশ নেন।ইতিমধ্যেই এই সমাবেশে অংশ নেওয়ার পর করোনায় আক্রান্ত হয়ে ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে তেলেঙ্গানায় এবং একজনের মৃত্যু হয়েছে কর্নাটকে।২৪ জনের শরীরে মিলেছে করোনাভাইরাস।ওই সমাবেশে যোগ দেওয়া ৪৪১ জনের শরীরে ইতিমধ্যে দেখা দিতে শুরু করেছে করোনার উপসর্গ।