এসব ব্যবসা কীভাবে বাড়াবেন? আপনার লক্ষ্যস্থল কারা? তাদেরকে কীভাবে পাবেন? কীভাবে তাদের তালিকা বড় করবেন? আর এটা করতে গিয়ে, তাদেরকে বিরক্ত না করে কীভাবে এটা করবেন? কীভাবে কন্টেন্ট বা আধেয় তৈরি করবেন?
হার্ভার্ড-এর একজন অ্যালামনাই এবং ডিজিটাল স্ট্রাটেজির এডুকেটর ড. স্যান্ডি চঙ দুই শতাধিক ব্যবসাকে সহায়তা করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ইয়াহু, সান মাইক্রোসিস্টেম, আমেরিকান এক্সপ্রেস এবং অ্যাপল।
এসব প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অনলাইন বিজনেস শুরু করার সর্বোত্তম উপায় হলো একটি ওয়েবসাইট থাকা, আপনার টার্গেট অডিয়েন্স সনাক্ত করা এবং কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার অ্যাকাউন্ট থাকা।
Advertisement
হাইলাইটস
- অস্ট্রেলিয়ান ব্যুরো অফ স্টাটিস্টিক্স এর তথ্য অনুসারে, অস্ট্রেলিয়ায় শতকরা ৯৮ ভাগ ব্যবসাই হলো ক্ষুদ্র ব্যবসা, যেগুলোতে কর্মী-সংখ্যা ২০ জনের কম।
- অস্ট্রেলিয়ায় মাইক্রো এবং ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য আর্থিক সহায়তা এবং ফ্রি মনিটরিং সেবা লাভের সুযোগ রয়েছে সরকারি-অর্থায়নকৃত New Enterprise Incentive Scheme বা NEIS প্রোগ্রামে।
- ব্যবসা দীর্ঘ-মেয়াদে টিকে থাকার ক্ষেত্রে শক্তিশালী সেলস ফানেল বা বিপণন ব্যবস্থা তৈরি করাটা জরুরি।
সমাজের অগ্রগতি ও কল্যাণে ভূমিকা রাখার কারণে অস্ট্রেলিয়া ডে ২০২০ এ ‘কমিউনিটি সিটিজেন অফ দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন ড. চঙ।
তিনি বলেন, CALD বা ভাষা ও সংস্কৃতির দিক থেকে বৈচিত্রপূর্ণ কমিউনিটিগুলোর ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা তাদের আকর্ষণীয় সেবাসমূহ কিংবা চমৎকার বিজনেস মডেল থাকা সত্ত্বেও অনলাইন মার্কেটপ্লেসে প্রায়ই চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়।
অস্ট্রেলিয়ায় মাইক্রো এবং ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য আর্থিক সহায়তা এবং ফ্রি মনিটরিং সেবা লাভের সুযোগ রয়েছে সরকারি-অর্থায়নকৃত বা NEIS প্রোগ্রামে। এই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তারা প্রথম ১২ মাসের জন্য বিনামূল্যে মনিটরিং সার্ভিস পান এবং ব্যবসা-কার্যক্রমের প্রথম ৩৯ সপ্তাহ পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা পান।
Small business micro-business woman entrepreneur. Source: Getty Images/filadendron
মেলবোর্নে NEIS ট্রেইনিং সম্পন্ন করার পর মাজা জাদ্রিজেভিক তার ‘মায়া ডট আর্থ’ ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেন এবং অনলাইনে যোগ-ব্যায়ামের ক্লাসের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা শুরু করেন।
বিদ্যমান মাইক্রো-বিজনেসগুলো, যেগুলো কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারীর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলোও ব্যবসা চালানোর জন্য NEIS থেকে সহায়তা নিতে পারে।
আর, যারা পার্ট-টাইম চুক্তিতে কাজ করেন, যারা সপ্তাহে ২৫ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করেন, তারাও যদি নিজের ব্যবসা শুরু করতে চান, তাহলে NEIS থেকে সহায়তা গ্রহণ করতে পারবেন।
NEIS প্রভাইডাররা স্থানীয়। আপনি কিংবা ট্রেইনিংও করতে পারেন।
Source: Getty Images/10'000 Hours
ডিজিটাল মার্কেটিং ফার্ম CODI এজেন্সির ডাইরেক্টর লিসা টেহ বলেন, বাজারে অনেক ওয়েবসাইট নির্মাতা আছে, যারা ফ্রি প্লান অফার করে যে, কীভাবে একটি প্রফেশনাল ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে।
ড. চঙ বলেন, আপনার অডিয়েন্স কারা তা বুঝাটা জরুরি। তারা কোন সামাজিক-যোগাযোগ-মাধ্যম ব্যবহার করে এবং তাদের চাহিদা কী- এগুলো জানতে হবে।
কাস্টোমারদের পছন্দের সোশাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে নতুন কাস্টোমার টার্গেট করার প্রতি জোর দেন লিসা টেহ।
ব্যবসা একবার শুরু হলে এবং অনলাইনে চলে গেলে সেটির টিকে থাকার বিষয়টি, বিশেষভাবে বহু-সাংস্কৃতিক কমিউনিটিগুলোর জন্য অন্যতম উদ্বেগের বিষয় বলে মনে করেন ড. চঙ।
নিউ সাউথ ওয়েলস সরকারের একটি ফ্রি প্রোগ্রাম হলো বিজনেস কানেক্ট। এর মাধ্যমে আরবী, দারি, ইরানি, কোরিয়ান, ম্যান্ডারিন এবং ভিয়েতনামী ভাষায় ব্যবসা-সম্পর্কিত পরামর্শ প্রদান করা হয়।
ফার্সিভাষী ব্যবসা-বিষয়ক একজন পরামর্শদাতা নাজনিন মাজিদি বলেন, উদ্যোক্তারা তাদের নিজেদের ভাষায় বাস্তবসম্মত পরামর্শ পেতে পারেন যে, কীভাবে ব্যবসা শুরু করবেন, চালাবেন, খাপ খাওয়াবেন কিংবা ছোট ব্যবসাকে বিকশিত করবেন।
Source: Getty Images/TravelCouples
মাজা জাদ্রিজেভিক তার অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছান তার ওয়েবসাইট, একটি মাসিক নিউজলেটার, ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুকের মাধ্যমে।
তিনি সম্প্রতি ক্রোয়েশিয়া থেকে অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসন করেছেন। তিনি স্বীকার করেন যে, ইন্টানেটের জন্য কন্টেন্ট বা আধেয় লেখা তার সাধ্যাতীত। তাই তিনি একজনকে নিয়োজিত করেছেন যিনি সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন।
লিসা টেহ বলেন, ব্যবসা দীর্ঘ-মেয়াদে টিকে থাকার ক্ষেত্রে শক্তিশালী সেলস ফানেল বা বিপণন ব্যবস্থা তৈরি করাটা জরুরি।
অস্ট্রেলিয়ান ব্যুরো অফ স্টাটিস্টিক্স এর তথ্য অনুসারে, অস্ট্রেলিয়ায় শতকরা ৯৮ ভাগ ব্যবসাই হলো ক্ষুদ্র ব্যবসা, যেগুলোতে কর্মী-সংখ্যা ২০ জনের কম।
এ রকম প্রতিযোগিতামূলক ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদেরকে অবশ্যই তিনটি বিষয়ের প্রতি জোর দিতে হবে। ব্রান্ডিং, মার্কেটিং এবং সেলস। তবে, একটি ছোট ব্যবসা চালানো এবং কাস্টোমারদের জন্য এর প্রতিটি পর্যায়ে ডিজিটাল স্ট্রাটেজি রাখ সহজ বিষয় নয়।
এক্ষেত্রে তিন ভাগের নিয়মের প্রতি জোর দেন ড. চঙ।
উপকারী, উৎসাহব্যঞ্জক এবং শিক্ষামূলক ও প্রাসঙ্গিক আধেয় শেয়ার ও ব্রান্ডিং করা হলো তিন ভাগের এক ভাগ।
ব্যবসা কিংবা সেবাসমূহ তুলে ধরার জন্য মার্কেটিং করা হলো অপর এক-তৃতীয়াংশ।
আর, বাকি তিন ভাগের এক ভাগ হলো সেলস। এর মাধ্যমে সেই ২০ শতাংশ অডিয়েন্সের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে, যারা আপনার রেভিনিউয়ের ৮০ শতাংশ যুগিয়ে থাকে।
Source: Getty Images/AsiaVision
লিসা টেহ বলেন, অনলাইনে সাফল্য পেতে হলে কীভাবে টেকসই আধেয় তৈরি করতে হবে তা সনাক্ত করতে হবে।
মেলবোর্নে লকডাউনের সময়ে মাজা জেড্রিজেভিক তার যোগ-ব্যায়ামের ক্লাস ভিডিও করা ও সম্পাদনা করা শেখেন।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এর এই সময়টিতে অনলাইনের মাধ্যমে তার ব্যবসা অনেক বড় হয়েছে এবং তিনি নতুন নতুন অনেক কাস্টোমার পেয়েছেন।