প্রতিবেশী দু’দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে ফোন করে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী নিজেই। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহাল প্রচণ্ড এবং মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবীন্দ জুগনথ শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পেয়েছেন। সূত্রের খবর, বুধবারই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী নিজেই। আর তারপরেই শুক্রবারই দিল্লিতে আসবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টকেও ফোন করে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। খবরের সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের সচিবালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, নরেন্দ্র মোদী নিজে ফোন করে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির থাকার জন্য রনিল বিক্রমসিঙ্ঘেকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
এর আগে, তৃতীয়বার বিজেপির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের বিজয়ী হওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের জনগণ, সরকার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত ও পরিবারের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে। টানা তৃতীয়বার এনডিএ’র বিজয়ে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেছেন, নরেন্দ্র মোদির বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এটা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যেকার সুপ্রতিবেশি সুলভ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেছেন, নরেন্দ্র মোদির এই বিজয়ের মধ্যে দিয়ে ভারত এবং ভারতের জনগণ আরও এগিয়ে যাবে, বিশ্ব সভায় আরও এগিয়ে যাবে।
এদিকে ভারত-আমেরিকার বন্ধুত্ব আগামী বছরগুলিতে অনেক নতুন মাইলফলকের সাক্ষী হতে চলেছে। নির্বাচনী সাফল্যে নরেন্দ্র মোদীকে বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবেও তৃতীয়বারের জন্য শপথ নিতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী। সোশ্যাল মিডিয়া, এক্স হ্যান্ডলে নরেন্দ্র মোদী লিখেছেন, বন্ধু প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ফোন পেয়ে তিনি খুশি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের শুভেচ্ছাবার্তা এবং ভারতীয় গণতন্ত্রের প্রশংসার মূল্য তাঁর কাছে অনেক। জো বাইডেন তাঁর বার্তায় জানিয়েছেন, ভারত-মার্কিন বন্ধুত্ব আগামী বছরগুলিতে অনেক নতুন মাইলফলকের সাক্ষী হতে চলেছে। তাদের বন্ধুত্ব মানবতার কল্যাণে এবং বিশ্বের মঙ্গলের জন্য অন্যতম শক্তি হিসেবে কাজ করবে।

NEW DELHI, INDIA - SEPTEMBER 6: Prime Minister of Bangladesh Sheikh Hasina with Prime minister Narendra Modi prior to delegation levels talk at Hyderabad house on September 6, 2022 in New Delhi, India. India and Bangladesh signed seven Memorandum of understanding (MoUs). Foreign secretary Vinay Kwatra said on Tuesday that Prime Minister Narendra Modi and Bangladeshi PM Sheikh Hasina has a discussion on a range of bilateral issues related to water, trade, economic ties etc. (Photo by Sonu Mehta/Hindustan Times/Sipa USA) Source: AAP / Sipa USA
ওদিকে, জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমার এবং টিডিপি সুপ্রিমো চন্দ্রবাবু নায়ডুর সমর্থনপত্র নিয়ে শেষ হয়েছে এনডিএ-র বৈঠক। আর বৈঠক শেষ হতেই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে সরকার গঠনের আগে প্রথামাফিক পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। সব ঠিক থাকলে ৭ জুন, শুক্রবার এনডিএ-এর বৈঠকে নরেন্দ্র মোদীকে সংসদীয় দলের প্রধান হিসেবে বেছে নেওয়া হবে। আর তারপর রাষ্ট্রপতি ভবনে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন নরেন্দ্র মোদী।
উল্লেখ্য, ১০ বছর পর আবার জোট সরকার দেখতে যাচ্ছে ভারত। এবারের নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় তৃতীয়বার সরকার গড়তে নরেন্দ্র মোদীর প্রয়োজন ছিল জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার এবং তেলুগু দেশম পার্টির প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডুকে। কিন্তু দেশে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া উঠতেই তাদের নিয়ে সংশয় ছিল। তবে রাজধানীর এনডিএ-এর বৈঠকে স্বস্তি ফিরেছে। সূত্রের খবর, শরিক দলগুলির সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনায় রফা চুড়ান্ত হওয়ার পর এনডিএ জোটকে সমর্থন দিয়েছেন নীতীশ কুমার ও চন্দ্রবাবু নায়ডু। বৈঠকে নীতীশ কুমার বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব নতুন সরকার গঠন হওয়া উচিত।
এর মধ্যে খবর, বিরোধীদের ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের পর কংগ্রেসকে নিয়ে সন্তুষ্ট নয় কয়েকটি শরিক দল। বৃহস্পতিবার সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমোর অখিলেশ যাদবের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের পর এই জল্পনা আরও বেড়ে গিয়েছে রাজধানীর রাজনীতিতে। বৃহস্পতিবার সকালে অখিলেশ যাদবের বাড়িতে উপস্থিত হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনও। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়দের স্বাগত জানাতে বাড়ির প্রবেশদ্বার পর্যন্ত এগিয়ে আসেন অখিলেশ যাদব। কাঁধে হাত রেখে নিয়ে যান বাড়ির ভিতরে। এরপরে প্রায় ৪০ মিনিট ধরে চলে বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের দুই অন্যতম প্রধান শরিকের শীর্ষ নেতার বৈঠক। তারপর তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ফেরার পর তাঁর বাসভবনে হাজির হন আপ সাংসদ রাঘব চাড্ডা এবং শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত।
অন্যদিকে, এনডিএ ছেড়ে আবার কাকা শরদ পাওয়ারের শিবিরে ভাইপো অজিত পাওয়ার ফিরতে চলেছে বলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কারণ, দিল্লিতে এনডিএ-এর বৈঠকে মহারাষ্ট্র সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা এনসিপি প্রধান অজিত পাওয়ার উপস্থিত ছিলেন না। এর মধ্যে দিল্লি বিমানবন্দরে চন্দ্রবাবু নায়ডুর সঙ্গে দেখা করেছেন বিরোধীদের, ইন্ডিয়া জোটের আরেক শরিক ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিন। বেশ কিছুক্ষণ আলোচনা হয়েছে দু'জনের। কিন্তু কী আলোচনা হয়েছে, সেটা স্পষ্ট নয়।





