১ জুন থেকে খুলবে জুটমিল, চায়ের দোকানও।তিনি বলেছেন,শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনে পরিযায়ী শ্রমিকরা আসছেন।সেখানে কি আদৌ কোনও সুরক্ষাবিধি মানা হচ্ছে। একটা সিটে তিন জন করে আসছেন, গাদাগাদি অবস্থা।ট্রেনে এতগুলো মানুষ গাদাগাদি করে যেতে পারলে চায়ের দোকান, মন্দির, অফিস, জুটমিলও খুলুক।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দেশজুড়ে লকডাউন চললেও নানা বিধিনিষেধ শিথিল করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।এই পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ রাখার কোনও যুক্তি নেই বলে তাঁর অভিমত।যে কারণে ১ জুন থেকে ধীরে ধীরে রাজ্যের সমস্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও লকডাউন পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বিভিন্ন জায়গায় জমায়েত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।তিনি বলেছেন,অনেক জায়গাতেই বহু মানুষ জড়ো হচ্ছেন।একসঙ্গে সবাই বাজারে গেলে করোনার সংক্রমণ বাড়বে।এ ছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, যেখানেই যাবেন, মাস্ক অবশ্যই পরবেন।
অন্যদিকে ,জরুরি অবস্থার থেকেও পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা খারাপ। এই ভাষাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বলেছেন,এমার্জেন্সির থেকেও খারাপ অবস্থা।তোপ দেগেছেন,ত্রাণ দিতে মমতাদের এমপি, এমএলএ, মন্ত্রীরা যাচ্ছেন। আর বিজেপি গেলেই দোষ।
পশ্চিমবঙ্গে আটকানোর বিষয়টা পুরোটাই রাজনীতি। একইসঙ্গে দিলীপ ঘোষ আরও দাবি করেছেন, রাজ্যপালের চাপেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। নইলে তাঁকেও দলের একাধিক নেতা-কর্মীদের মতো গ্রেফতার করা হত।দিলীপ ঘোষ অভিযোগ করেছেন, করোনা মোকাবিলায় সরকার প্রথম থেকেই নেগলিজেন্স দেখিয়েছে।যার ফলে আজকে বাংলায় করোনা আক্রান্তের পরিস্থিতি এই অবস্থায় পৌঁছেছে।
এদিকে,পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রীও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত এই রোগ পৌঁছে গিয়েছে।উল্লেখ্য,করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ও তাঁর স্ত্রী।তারপর থেকেই সস্ত্রীক হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন মন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে, ১ জুন সকাল ১০টা'র পরে সমস্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের দরজা খোলা যাবে।একইসঙ্গে প্রত্যেকের ক্ষেত্রে মাস্ক পরাও বাধ্যতামূলক। সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি যাতে মেনে চলা হয় তা নিশ্চিত করার ভার সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির পরিচালন সমিতির। কোথাও নিয়ম অমান্য করা হলে প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মমতা।
এদিকে ,১ মে পর্যন্ত চতুর্থ দফার লকডাউনের মেয়াদ শেষ হবে। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, লকডাউন চলাকালীন দেশের সমস্ত মন্দির, মসজিদ, গির্জা-সহ সমস্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ১ জুন থেকে পঞ্চম দফার লকডাউন শুরু হবে কি না, তা নিয়ে জল্পনার অন্ত নেই।তার মধ্যেই আগামী মাসের প্রথম দিন থেকে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান খোলার কথা ঘোষণা করল রাজ্য সরকার।
এর আগে ,শুক্রবার সকালে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। লকডাউনের বিষয়ে স্ট্র্যাটেজি ঠিক করতেই তারা বৈঠক করেছেন বলে খবর।এর আগের দিনই সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছেন অমিত শাহ। লকডাউনের বিষয়ে তাদের মতামত নেওয়া হয় এই বৈঠকে। এরপর এই বিষয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতেই প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কথা বলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
বৈঠক শেষে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত বলেছেন, তার মনে হচ্ছে লকডাউন আরও ১৫ দিনের জন্য বাড়তে পারে। তবে লকডাউনের নিয়মে আরও কিছু শিথিলতা চাওয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে রেস্তোরাঁগুলি চালু করার দাবি জানানো হয়েছে।আরও দু’সপ্তাহ লকডাউন বাড়ানোর সম্ভাবনা থাকলেও এ নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে খবর।
চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা হতে পারে শনিবার।বৈঠক সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীদের মতামত প্রধানমন্ত্রী মোদিকে বিশদে জানিয়েছেন অমিত শাহ। পাশাপাশি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রেখেও অর্থনৈতিক কাজকর্মে কীভাবে আরও গতি আনা যায়—তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও বৈঠক সূত্রে জানা গিয়েছে।