দিল্লীর শাহিনবাগে রাস্তা আটকে আন্দোলন না করতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায়

ভারতের রাজধানী দিল্লির শাহিনবাগের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে,বিক্ষোভের নামে সরকারি জায়গা বা সরকারি রাস্তা এভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য দখল করে রাখা যায় না। বিক্ষোভ দেখানো নাগরিকদের অধিকার, কিন্তু সেজন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষতিসাধন করা সম্ভব নয়।বলা হয়েছে, পাবলিক প্লেসে বিক্ষোভ প্রতিবাদ অবাধ নয়।

Indian policemen stop protesters at a police barricade in New Delhi (File image)

Indian policemen stop protesters at a police barricade in New Delhi (File image) Source: AP

প্রতিবাদ দেখানোর জন্য অনির্দিষ্টকাল ধরে পাবলিক প্লেস আটকে রাখা যাবে না। ভারতের রাজধানী দিল্লীর আলোচিত শাহীন বাগ নিয়ে করা পিটিশন মামলায় স্পষ্ট করে দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে দক্ষিণ দিল্লির শাহীন বাগে বিক্ষোভ ও রাস্তা অবরোধের কারণে সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়েছে বলেও মনে করিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কলের নেতৃত্বধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ শাহীন বাগ নিয়ে রায় দিতে গিয়ে জানিয়েছে, মতবিরোধ ও গণতন্ত্র হাত ধরাধরি করে চলবে। তবে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ অবশ্যই দেখাতে হবে নির্দিষ্ট জায়গায়। আদালতের কথায়, বিক্ষোভ দেখানোর জন্য পাবলিক প্লেস আটকে রাখাটা গ্রহণযোগ্য নয়। পাবলিক প্লেস থেকে এ ধরনের জমায়েত সরাতে ব্যবস্থা নিতে হবে প্রশাসনকে।

গতবছর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পর ভারতজুড়ে বহু মানুষ এর বিরোধিতায় সরব হন। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সি এ এ  বিরোধী সেই আন্দোলনের পথিকৃৎ ছিল শাহীন বাগ।ডিসেম্বর থেকে চলতি বছর মার্চ মাস পর্যন্ত সিএএ বিরোধী আন্দোলনে চলেছে রাজধানীর ওই অঞ্চলে।

শাহিনবাগে হাজার হাজার সংখ্যালঘু মহিলা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধরনাতেও বসেন। শেষমেশ করোনা পরিস্থিতির জন্য সেই ধরনা প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু প্রতীকী আন্দোলন এখনও চলছে। শাহিনবাগ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজধানী দিল্লির বুকে হিংসার আগুনও জ্বলেছে।

শাহীন বাগের রাস্তা অবরোধ নিয়ে বহু রাজনৈতিক টানাপড়েনও হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যেই কেউ কেউ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আবার এই বিক্ষোভ নিয়ে আদালতেও এতদিন অবধি মামলা চলছিল। বুধবার সেই মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে,শাহিনবাগ হোক বা অন্য যে কোনও জায়গা। এভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য সরকারি জায়গা বা রাস্তা দখল করে রাখা যায় না।

প্রশাসনের উচিত ছিল আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে গুলি না চালিয়ে, নিজে থেকে ব্যবস্থা করা। আদালত বলছে, অনেক আগেই দিল্লি পুলিশের উচিত ছিল শাহিনবাগ এলাকা খালি করে দেওয়া। তবে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, বিক্ষোভ তাঁরা বন্ধ করতে চান না। এটা গণতন্ত্রেরই অংশ। তবে, বিক্ষোভ হওয়া উচিত নির্দিষ্ট স্থানে। সরকারি জায়গায় নয়।

এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে আইনজীবী অমিত সাহনি শাহীন বাগের রাস্তা অবরোধ তোলার দাবি জানিয়ে পিটিশন দাখিল করেছিলেন।সেই পিটিশনের শুনানিতেই এই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।গত বছর ১২ ডিসেম্বর পাশ হয় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন।

এর আগে থেকেই এই আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে শুরু হয়েছিল প্রতিবাদ-আন্দোলন। আইন পাশ হওয়ার সেই বিক্ষোভ আরও জোরালো হয়ে ওঠে। আর সেই আন্দোলনের উপকেন্দ্র হয়ে উঠেছিল দিল্লির শাহীন বাগ। ১৫ ডিসেম্বর থেকে শাহীন বাগে অবস্থান করে শুরু হয় বিক্ষোভ। সেই বিক্ষোভ চলে টানা ৩ মাস।

আরও পড়ুনঃ 

Share

Published

By Partha Mukhapadhdhaya
Presented by Shahan Alam

Share this with family and friends


Follow SBS Bangla

Download our apps
SBS Audio
SBS On Demand

Listen to our podcasts
Independent news and stories connecting you to life in Australia and Bangla-speaking Australians.
Ease into the English language and Australian culture. We make learning English convenient, fun and practical.
Get the latest with our exclusive in-language podcasts on your favourite podcast apps.

Watch on SBS
SBS Bangla News

SBS Bangla News

Watch it onDemand