বেকারত্ব বাড়ছে ভারতে : লক ডাউন বাড়াতে চায় পশ্চিমবঙ্গ

ভারতে চতুর্থ দফার লক ডাউনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে রবিবার, ৩১ মে। তারপরের পর্যায়ে কোভিড মোকাবিলায় রাজ্যগুলি কী ভাবছে তা জানতে বৃহস্পতিবার সব রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করেছেন ক্যাবিনেট সচিব। লকডাউনের মেয়াদ আর বাড়ানো হবে কি না, তা এখনও অজানা।

An Indian man on his bike passes the parked auto rickshaw during a nation wide lockdown in Mumbai, India, 15 May 2020.

An Indian man on his bike passes the parked auto rickshaw during a nation wide lockdown in Mumbai, India, 15 May 2020. Source: AAP

১ জুন থেকে রাজ্যে লোকাল ট্রেন এবং মেট্রো চালানোর বিরোধিতা করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।শহরতলির ট্রেন এবং মেট্রোর মতো গণপরিবহণ ব্যবস্থা চালু করার বিষয়ে রাজ্যের অভিমত জানতে চাওয়া হয় ওই বৈঠকে। রাজ্যের কোভিড চিত্রের উল্লেখ করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ শহরতলির ট্রেন এবং মেট্রো পরিষেবা এখনই চালু না করার কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রকে।

প্রতিদিন শিয়ালদহ এবং হাওড়া স্টেশন থেকে পূর্ব এবং দক্ষিণ পূর্ব রেলের লোকাল ট্রেনে প্রায় ২২ লাখ যাত্রী যাতায়াত করেন।মেট্রো সফর করেন গড়ে প্রতি দিন প্রায় ৫ লাখ মানুষ।লোকাল ট্রেন ও মেট্রোয় আদৌ কতটা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা সম্ভব তা নিয়ে সংশয় রয়েছে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদেরই।ঠিক সেই কারণেই তাঁদের আশঙ্কা, লোকাল ট্রেন এবং মেট্রো চালু হলে কোভিড সংক্রমণ লাগাম ছাড়া হয়ে পরিস্থিতি হাতের বাইরেও চলে যেতে পারে।সেই পরিস্থিতির কথা ব্যাখ্যা করেই লোকাল ট্রেন ও মেট্রো পরিষেবা চালুর ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের তরফে আপত্তির কথা জানানো হয়েছে।

জানা গেছে দিল্লির সঙ্গে বৈঠকে ফের কেন্দ্রকে জানানো হয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকরা ফেরত আসার পর কী ভাবে পশ্চিমবঙ্গে করোনা পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া এবং উত্তর দিনাজপুরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। সূত্রের খবর,কন্টেনমেন্ট জোনে পুরোপুরি লকডাউন রাখার কেন্দ্রীয় প্রস্তাবে সহমত জানিয়েছে রাজ্য। আলোচনা হয়েছে, শপিং মল খোলার বিষয়েও। ইতিমধ্যেই কর্নাটকে শপিং মল কর্তৃপক্ষগুলি রাজ্যের কাছে মল খোলার অনুমতি চেয়েছে। মল কর্তৃপক্ষ সরকারকে আশ্বস্ত করেছেন, তাঁরা সামাজিক দূরত্ব মেনে জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

এদিকে,করোনা সংক্রমণের এই সময়ে এক মাসেই কাজ হারিয়েছেন ১২ কোটিরও বেশি মানুষ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই সংখ্যাটা আরও বাড়বে।বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান, অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি নিয়ে গবেষণা ও সমীক্ষাকারী বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি বা, সিএমআইআই-এর তরফে দাবি করা হয়েছে,শুধুমাত্র মে মাসেই কাজ হারিয়েছেন প্রায় ১২ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ।

পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর ছাড়পত্র না দেওয়া পর্যন্ত সেই চিত্রটা বোঝা যায়নি।কর্মস্থলে আটকে থাকায় ধরে নেওয়া হচ্ছিল যে, তাঁরা কাজ থেকে বরখাস্ত হননি।কিন্তু পরিযায়ীদের জন্য শ্রমিক স্পেশাল চালু হতেই ভয়াবহ চিত্রটা সামনে আসতে শুরু করে।সিএমআইআই-এর ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দিনমজুরির ভিত্তিতে কাজ করা শ্রমিক এবং যাঁরা নিজে ছোটখাট ব্যবসা করেন তাঁরা।এর মধ্যে রয়েছেন হকার, ফুটপাতের ব্যবসায়ী, নির্মাণ শিল্পের শ্রমিক, রিকশা-অটো চালকদের মতো পেশার লোকজন।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন নিয়ে বহুজাতিক পরামর্শদাতা সংস্থা আইপিই গ্লোবাল-এর মতে, ভাইরাসের চেয়েও বেশি মানুষের মৃত্যু হবে অভাবে।অভিযোগ,বহু বছর ধরে দারিদ্র দূরীকরণে ভারত সরকারের সমস্ত প্রচেষ্টা মাত্র কয়েক মাসেই বিফল করে দিয়েছে।করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও তা রুখতে লকডাউনের জেরে গত তিন মাসে সেই চেষ্টা পুরোপুরি জলে গিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।ফলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির কথা ছেড়ে আপাতত অসংগঠিত ক্ষেত্রে শ্রমিকদের কাজ ফেরানোই বড় সঙ্কট হয়ে দাঁড়িয়েছে। সময় যত গড়াচ্ছে, আরও শোচনীয় হয়ে পড়ছে পরিযায়ী শ্রমিকদের অবস্থা।


Share

Published

Updated

By Partha Mukhapadhdhaya
Presented by Abu Arefin

Share this with family and friends


Follow SBS Bangla

Download our apps
SBS Audio
SBS On Demand

Listen to our podcasts
Independent news and stories connecting you to life in Australia and Bangla-speaking Australians.
Ease into the English language and Australian culture. We make learning English convenient, fun and practical.
Get the latest with our exclusive in-language podcasts on your favourite podcast apps.

Watch on SBS
SBS Bangla News

SBS Bangla News

Watch it onDemand
বেকারত্ব বাড়ছে ভারতে : লক ডাউন বাড়াতে চায় পশ্চিমবঙ্গ | SBS Bangla