হাইলাইটস
- ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণসহ বর্বর নির্যাতনের মুখে দলে দলে রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসে।
- কক্সবাজারে বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে ইয়াবার রমরমা কারবার চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তাদের বিভিন্ন সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহারের চেষ্টা চালাচ্ছে একটি গোষ্ঠী।
তারা যে স্বপ্ন দেখেছিল, একটি ভাল পরিবেশে থাকার, সেটা তারা ভাসানচরে আপাতত পেয়েছে।

বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর একটি দৈনিকের কূটনৈতিক প্রতিনিধি মাহ্দী হাসান ভাসানচরে অনেক রোহিঙ্গার সাথে কথা বলেছেন। Source: Mahadi Hasan
“আমি মূলত জানার চেষ্টা করেছি রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় যাচ্ছেন কিনা। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। সংখ্যাটা প্রায় পঞ্চাশের উপর হবে। কারণ, আমি সারাটা দিন তাদের সঙ্গে ছিলাম। তারা প্রত্যেকেই বলেছে, স্বেচ্ছায় গেছে।”
“ভাসানচরে পৌঁছার আগে যখন দূর থেকে দ্বীপটা স্পষ্ট হচ্ছিল, তারা সবাই আগ্রহ নিয়ে দেখেছে এবং ভিতরে পৌঁছার পর যে পরিবেশ তারা দেখেছে, যে পাকা দালান, রাস্তাঘাট, পানির ব্যবস্থা আছে, বিদ্যুতের ব্যবস্থা আছে, তারপর খেলার মাঠ আছে। এসব দেখে তারা খুবই খুশি হয়েছে।”
“আমি পরের দিন কথা বলেছি। প্রায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তাদের ঘরে ঘরে গিয়েছি। তারা বলেছে যে, তারা বেশ খুশি। তারা যে স্বপ্ন দেখেছিল, একটি ভাল পরিবেশে থাকার, সেটা তারা ভাসানচরে আপাতত পেয়েছে।”
বেশ কিছু রোহিঙ্গা, যারা কিনা বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত, এসব রোহিঙ্গারা কিন্তু ভাসানচরে যেতে বাধা দিচ্ছে।

কক্সবাজারের একটি জাতীয় দৈনিকের প্রবীণ সাংবাদিক তোফায়েল আহমেদ বলেন,ভাসানচরে রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় যাচ্ছে, তাদের কাউকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার কথা আমাদের জানা নেই। Source: Tofayal Ahmad
“আমরা স্থানীয় সাংবাদিকরা, আমরা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যতদূর আলাপ-সালাপ করতে পেরেছি, তারা আমাদেরকে বলেছে যে, তারা স্বেচ্ছায় যাচ্ছে, কোনো জোর করে নেওয়ার ঘটনা আমাদের জানা নেই।”
“বেশ কিছু রোহিঙ্গা, যারা কিনা বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত, এসব রোহিঙ্গারা কিন্তু ভাসানচরে যেতে বাধা দিচ্ছে।”
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণসহ বর্বর নির্যাতনের মুখে দলে দলে রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসে। এই জনগোষ্ঠীর বিপুল সংখ্যক মানুষের খাদ্য, পানীয়, স্যানিটেশন, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা দিতে গিয়ে বাংলাদেশ হিমশিম খাচ্ছে। কক্সবাজার অঞ্চলের স্থানীয় মানুষের জীবন রীতিমতো দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। একটি জেলার একটি অংশে ১ মিলিয়নেরও বেশি অতিরিক্ত মানুষ আশ্রয় নেওয়ায় তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। বাংলাদেশের মতো একটি দুর্বল অর্থনীতির দেশের পক্ষে দীর্ঘকাল ধরে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার ভার বহন করা সম্ভব নয়। অন্যদিকে অভিযোগ আছে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদসহ বিভিন্ন অপরাধীচক্র রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে নানা ধরনের অপরাধ নেটওয়ার্ক তৈরিতে তৎপর রয়েছে। স্থানীয় সন্ত্রাসীরাও তাদের দলে টানার চেষ্টা করছে। আবার বেসরকারি সংস্থার ছদ্মবেশেও অনেকে অনেক রকম উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে অনেকবারই বলা হয়েছে, কক্সবাজারে বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে ইয়াবার রমরমা কারবার চলছে। গড়ে উঠেছে ‘বাঙালি-রোহিঙ্গা’ সিন্ডিকেট। উখিয়া ও টেকনাফের আশ্রয়শিবিরগুলোকে ইয়াবা কারবারের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছে এই মাদক পাচারকারীচক্র।
সরকারের উচ্চ পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের বিষয়টিও তাদের এ দেশে আশ্রয় দেওয়ার মতো সাময়িক। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের ওপরই সরকার জোর দিচ্ছে।
প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।









