দেশের সকল মানুষকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে সবার সুস্বাস্থ্যের কামনা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই নিয়ে করোনা পরিস্থিতিতে চতুর্থবার দেশের মানুষের প্রতি ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশে লকডাউনের মেয়াদ ৩ মে পর্যন্ত জারি রাখার ঘোষণা করা হলেও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সমস্ত রাজ্যের দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা হবে। কোথায় কোথায় করোনা সংক্রমণ বাড়ছে সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।যে যে অঞ্চলে দেখা যাবে নতুন করে আর করোনা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে না, সেখানে সেখানে ২০ এপ্রিলের পর থেকে লকডাউনের ক্ষেত্র থেকে কিছু কিছু ছাড় দেওয়া হবে।
এর আগে নববর্ষের সকালে বাংলা ভাষায় শুভেচ্ছা বার্তা লিখে টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি লিখেছেন,পয়লা বৈশাখের শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন।সকলে সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন।
তবে শুধু বাংলাতেই নয়, তামিলনাড়ু, কেরল ও অসমেও উৎসব রয়েছে। যেমন, তামিল নববর্ষ পুথাণ্ডু, কেরলে রয়েছে বিশু উৎসব।অন্যদিকে বাংলার প্রতিবেশী অসমে রয়েছে বিহু উৎসব। তবে এদিন সব জায়গাতেই উৎসব পালন করা হবে ঘরে বসেই। উল্লেখ্য, এই বছর বাঙালির নববর্ষের আনন্দ ফিকে করে দিয়েছে মারণ ভাইরাস। দেশব্যাপী লকডাউনের মঙ্গলবার ছিল ২১ তম দিন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ধৈর্য ধরে নিয়ম মেনে যদি লড়া যায় তবে করোনা ভাইরাসের মতো মহামারীকেও রুখে দিতে পারবে ভারত, আশাবাদী তিনি। তাঁর দাবি বিশ্বের অন্যান্য দেশের থেকে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বেশ কয়েক কদম এগিয়ে রয়েছে ভারত। যেভাবে আগে থেকেই বিমানবন্দর-সহ বিভিন্ন জায়গায় নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখা হয়েছে, তাতে অনেকটাই কমানো গেছে সংক্রমণের গতি, দাবি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। তিনি জানিয়েছেন, হটস্পটগুলিতে বাইরে বের হওয়ার উপর কড়া নিয়ন্ত্রণ থাকবে। নতুন হটস্পট হলে দায়িত্ব ও পরীক্ষা আরও বেড়ে যাবে। যে স্থানগুলি হটস্পটে পরিণত হতে পারে, সেগুলির উপরেও কড়া নজর রাখতে হবে। হটস্পটগুলিকে নির্ধারিত করে আগের থেকেও আরও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে দেশবাসীকে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ৭ টি নিয়ম মেনে চলার আহ্বান করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছেন, ৩ মে পর্যন্ত জারি থাকা লকডাউনে, প্রত্যেককে এই নিয়মগুলি মেনে চলতে হবে। দেশের যুবসমাজকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসার ও যোগদান করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আগামী কয়েকদিন এই ৭টি নিয়ম পালনের ফলে দেশজুড়ে করোনার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। যার মধ্যে রয়েছে, বাড়ির বয়স্কদের প্রতি খেয়াল রাখা। বিশেষ করে, যাঁদের আগে থেকেই কোনও অসুখ রয়েছে। তাঁরা সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মানছেন কিনা নজরের রাখা।
লকডাউন ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নিজে শুধু নয়, আশেপাশের সবাই যাতে নিয়ম মেনে চলেন, সেদিকেও নজর দিতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। বেরতে হলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে বাড়িতে বানানো মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। নিজের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে জোর দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী আবেদন জানিয়েছেন, এই সময়টা যতটা সম্ভব গরিব পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্যে, তাঁদের সাধ্য মতো সাহায্য করার জন্যে। নিজের ব্যবসা বা শিল্পোদ্যগের ক্ষেত্রে কর্মচারীদের প্রতি সমব্যাথী হয়ে কর্মীদের চাকরি থেকে বরখাস্ত না করতে, তাঁদের সহায় হওয়ার চেষ্টা করতে আবেদন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লড়ছেন যাঁরা, সেই ডাক্তার, নার্স, সাফাইকর্মী, পুলিসকর্মী সকলকে সম্মান করতে, তাঁদের যেন কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকে নজর দিতে আবেদন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
অস্ট্রেলিয়ানদেরকে অবশ্যই পরস্পরের মাঝে কমপক্ষে ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্যদের সঙ্গে হলে দু’জনের বেশি একত্রিত হওয়া যাবে না।

Source: SBS
আপনি যদি মনে করেন যে, আপনি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাহলে আপনার ডাক্তারকে কল করুন। ডাক্তারের কাছে যাবেন না। আপনি ন্যাশনাল করোনাভাইরাস হেলথ ইনফরমেশন হটলাইনেও কল করতে পারেন এই নম্বরে: 1800 020 080
আপনার যদি শ্বাস-কষ্ট কিংবা মেডিকেল ইমার্জেন্সি দেখা দেয়, তাহলে 000 নম্বরে কল করুন।
আপনার ভাষায় কোভিড-১৯ এর সর্বশেষ আপডেট জানাতে এসবিএস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ৬৩ টি ভাষায় এ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য পাবেন। ভিজিট করুন: sbs.com.au/coronavirus.
বাংলায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) বিষয়ক আমাদের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ভিজিট করুন: