অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্ট যেভাবে কাজ করে

How does Parliament work (SBS).jpg

How does Parliament work (SBS) Source: SBS

অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল নির্বাচনের সময় চলে এসেছে। নির্বাচনের দিন ভোট দিতে যাবার আগে জেনে নেয়া ভাল হবে যে অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থা কীভাবে কাজ করে। এটি জানা থাকলে ভোটের সিদ্ধান্ত নেয়া অনেক সহজ হবে। এই ভোটিং ১০১ সিরিজের মাধ্যমে আমরা অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টের দুটি চেম্বার এবং প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো সম্পর্কে জানতে পারব।


অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসছে। এই মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার রাজনীতি নিয়ে আমাদের মনে বিভিন্ন প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক।

তাহলে চলুন জানা যাক, অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্ট কীরকম এবং এদেশের রাজনীতির মাঠে প্রধান খেলোয়াড় কারা।

প্রথমত অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে, যা পরিচালিত হয় একটি প্রতিনিধিত্বমূলক সংসদীয় গণতন্ত্র দ্বারা।
অস্ট্রেলিয়া রাজতন্ত্রের অংশ হবার কারণ এটি ব্রিটিশ কমনওয়েলথের সদস্য, যার অর্থ এ দেশের কোনও রাষ্ট্রপতি নেই এবং - তার পরিবর্তে – কাগজে কলমে অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান হলেন যুক্তরাজ্যের কিং চার্লস। ব্যাপারটা যে কিছুটা অদ্ভুত, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

তাহলে ঠিক কবে থেকে একজন রাজা অস্ট্রেলিয়াকে শাসন করছেন?

বাস্তবিক, অস্ট্রেলিয়া একটি স্বাধীন দেশ, ১৯৮৬ সালে যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে সম্পূর্ণ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে দেশটি। সুতরাং এখন রাজা কেবল তার একজন প্রতিনিধি, যার পদবী গভর্নর জেনারেল, তার মাধ্যমে একটি ক্ষুদ্র, বলা যায় প্রতীকী ভূমিকা পালন করেন এবং - বাস্তবে – অস্ট্রেলিয়া পরিচালিত হয় তিন স্তরের সরকার দ্বারা।

সেগুলো হচ্ছে ফেডারেল পার্লামেন্ট, স্টেট বা টেরিটরি পার্লামেন্ট এবং স্থানীয় পৌর কাউন্সিল। এগুলির প্রত্যেকটির বিভিন্ন দায়িত্ব রয়েছে, তবে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা হল ক্যানবেরার ফেডারেল পার্লামেন্ট।
প্রতি তিন বছরে একবার ফেডারেল নির্বাচন আয়োজিত হয় এবং অস্ট্রেলিয়ানরা সেই শীর্ষ স্তরে তাদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য প্রার্থীদের ভোট দিতে পারে।

তারপরে যে দল বা দলের জোট সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায় বা সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন পায়, তারা হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের মাধ্যমে সরকার গঠন করে এবং একজন প্রাইম মিনিস্টার নিয়োগ করে।

কিন্তু হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস আসলে কী?

ফেডারেল পার্লামেন্ট দুটি চেম্বার বা কক্ষ নিয়ে গঠিত: প্রতিনিধি পরিষদ বা হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস, এটিকে নিম্নকক্ষ বা লোয়ার হাউসও বলে। আর অন্যটি হচ্ছে সেনেট, যাকে উচ্চকক্ষ বা আপার হাউসও বলা হয়।

অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল নির্বাচন পরিচালনাকারী স্বাধীন সংস্থা অস্ট্রেলিয়ান ইলেক্টোরাল কমিশনের ডেপুটি কমিশনার ক্যাথ গ্লিসন বলেছেন,
এই দুটি চেম্বারই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

স্বাভাবিক নিয়মে ফেডারেল সরকারকে কোনো আইন পাস করার জন্য হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে একটি বিল প্রবর্তন করতে হয়, যা সিনেটের মাধ্যমে পাস করাতে হয় এবং সবশেষে ক্রাউনের পক্ষ থেকে গভর্নর জেনারেল দ্বারা অনুমোদিত হতে হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল সরকারের উপর নিয়ন্ত্রণ সেন্টার-লেফট দল লেবার থেকে সেন্টার-রাইট দল অর্থাৎ লিবারাল-ন্যাশনাল কোয়ালিশনের দিকে সরে গেছে।

নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও লেবার পার্টির প্রধান অ্যান্থনি অ্যালবানিজি ভোটারদের কাছে তার রাজনৈতিক রেকর্ড তুলে ধরছেন।

এদিকে, কোয়ালিশন জোটের প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা পিটার ডাটন বলেছেন, নিজেকে দেশ পরিচালনা করার সুযোগ পাওয়ার যোগ্য বলে মনে করেন তিনি।

অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউটের মতে, প্রধান প্রধান দলগুলি ছাড়াও, স্বতন্ত্র রাজনীতিবিদ এবং ছোট দলগুলির প্রতি মানুষের সমর্থন গত ৪০ বছরে অবিচ্ছিন্নভাবে বেড়েছে।

এই ছোটখাটো দলগুলির মধ্যে রয়েছে অ্যাডাম ব্যান্ডের নেতৃত্বাধীন বামপন্থী গ্রিন পার্টি, যাদের ফেডারেল সংসদে চারজন এমপি এবং ১১ জন সিনেটর রয়েছে।

এছাড়াও রয়েছে পলিন হ্যানসনের নেতৃত্বাধীন ডানপন্থী ওয়ান নেশন পার্টি, সংসদে যাদের দু'জন সিনেটর রয়েছে।

তারা হাউস এবং সিনেটে উভয় পক্ষের মধ্যে ক্রসবেঞ্চে বসেন এবং আইন প্রণয়ন ও সে-বিষয়ক বিতর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
এবারের নির্বাচনে অস্ট্রেলিয়ানরা হাউসের ১৫০ জন সদস্যের পাশাপাশি সিনেটের ৭৬ সদস্যের মধ্যে ৪০ জনকে নির্বাচিত করবেন।

হাউসের সদস্যরা, যারা এম-পি নামেও পরিচিত, তারা তিন বছরের জন্যে নির্বাচিত হবেন, এবং পুরো অস্ট্রেলিয়া জুড়ে স্থানীয় কমিউনিটির প্রতিনিধিত্ব করবেন।

আর সিনেটের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একটু ভিন্ন।

জনসংখ্যার আকার নির্বিশেষে প্রতিটি রাজ্যে ১২ জন সিনেটর থাকেন তবে নর্দার্ন টেরিটরি এবং অস্ট্রেলিয়ান ক্যাপিটাল টেরিটরিতে থাকেন দুজন করে সিনেটর।

সিনেটরদের মেয়াদ সাধারণত ছয় বছর হয়ে থাকে তবে প্রতিবার নির্বাচনে সিনেটের প্রায় অর্ধেক অংশ নতুন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়।

মোটামুটি এগুলোই হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থার মূল বিষয়আশয়।

যদি আপনি ইতিমধ্যে পরিকল্পনা না করে থাকেন তবে আসন্ন নির্বাচনে কীভাবে আপনার ভোট দেবেন তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা শুরু করুন এবং ভোট দেওয়ার বিষয়ে যদি আরও কোনও প্রশ্ন থাকে তবে আরও জানতে ভিজিট করুন aec.gov.au

আর আপনি ভোট দেওয়ার যোগ্য কিনা তা জানতে আমাদের ভোটিং ১০১ এর অন্যান্য পর্বগুলি শুনুন এবং কীভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন সে-বিষয়ে আগেই বিস্তারিত জেনে নিন।

সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারে ক্লিক করুন

Share
Follow SBS Bangla

Download our apps
SBS Audio
SBS On Demand

Listen to our podcasts
Independent news and stories connecting you to life in Australia and Bangla-speaking Australians.
Ease into the English language and Australian culture. We make learning English convenient, fun and practical.
Get the latest with our exclusive in-language podcasts on your favourite podcast apps.

Watch on SBS
SBS Bangla News

SBS Bangla News

Watch it onDemand
অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্ট যেভাবে কাজ করে | SBS Bangla