বাংলাদেশের বহুল আলোচিত চলচ্চিত্র "মিশন এক্সট্রিম" অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। এই ছবিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন সাদিয়া নাবিলা, যিনি গত এক দশক ধরে আছেন অস্ট্রেলিয়ায়। এসবিএস বাংলার সাথে এক আলাপচারিতায় যোগ দিয়েছিলেন সাদিয়া নাবিলা এবং বঙ্গজ ফিল্মসের প্রতিষ্ঠাতা তানিম মান্নান। তাদের কাছে জানব ছবিটি সম্পর্কে।
গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
- অস্ট্রেলিয়ান দর্শকদের জন্য ছবিটি নিয়ে আরও আগ্রহের কারণ এতে গুরুত্বপূর্ণ দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন দুজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত অস্ট্রেলিয়ান তাসকিন রহমান এবং সাদিয়া নাবিলা
- এর আগে বলিউড সিনেমায় অভিনয়ের সূত্র ধরেই 'মিশন এক্সট্রিম' ছবির নির্মাতারা আগ্রহী হন সাদিয়া নাবিলার বিষয়ে, অভিষেক হয় তার বাংলা চলচ্চিত্রে
প্রায় ৪ বছর আগে বাংলাদেশ পুলিশের কয়েকজন সিনেমাপ্রেমী পুলিশ অফিসারের তত্ত্বাবধানে এবং দীপঙ্কর দীপনের পরিচালনায় নির্মিত 'ঢাকা অ্যাটাক' ছবিটি মুক্তি পায়। ছবিটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়, যার প্রেক্ষিতে নির্মাতারা ২০১৮ সালে উদ্যোগ নেন 'মিশন এক্সট্রিম' নির্মাণের।
'মিশন এক্সট্রিম' ছবিটির পরিচালনা করেছেন সানী সানোয়ার এবং ফয়সাল আহমেদ।
অস্ট্রেলিয়ান দর্শকদের জন্য ছবিটি নিয়ে আরও আগ্রহের কারণ এতে গুরুত্বপূর্ণ দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন দুজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত অস্ট্রেলিয়ান তাসকিন রহমান এবং সাদিয়া নাবিলা।
উল্লেখ্য যে 'মিশন এক্সট্রিম' ছবিটি দিয়েই তরুণ অভিনেত্রী সাদিয়া নাবিলার বাংলা চলচ্চিত্রে অভিষেক হচ্ছে।
ক্যানবেরা থেকে সাদিয়া নাবিলা এবং সিডনী থেকে অস্ট্রেলিয়ায় ছবিটির পরিবেশনের দায়িত্বে থাকা বঙ্গজ ফিল্মসের প্রতিষ্ঠাতা তানিম মান্নান এসবিএস বাংলার সাথে যোগ দিয়েছিলেন এক আলাপচারিতায়।
সাদিয়া নাবিলা, যিনি গত এক দশক ধরে আছেন অস্ট্রেলিয়ায়, এর আগে একটি বলিউড সিনেমাতে অভিনয় করেছেন।
তিনি জানান, বলিউড সিনেমায় অভিনয়ের সূত্র ধরেই 'মিশন এক্সট্রিম' ছবির নির্মাতারা তার সাথে যোগাযোগ করেন, এরপর অস্ট্রেলিয়া থেকেই একটা ভার্চুয়াল অডিশনের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে যান ছবিতে, এবং একই সাথে বাংলা চলচ্চিত্রে তার যাত্রা শুরু হয়।
চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মত একটি পেশাদার কাজে নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করেছেন জানতে চাইলে মিজ নাবিলা বলেন, "আমি ছোটবেলা থেকেই সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে জড়িত, আমি জানতাম যে আমি মিডিয়াতে কাজ করবো, স্কুলে থাকতে আমি বলতাম বড় হয়ে নায়িকা হতে চাই, তারপর মডেলিং, এক্টিং করি।"
তিনি বলেন, তবে আমার সবসময়েই প্রত্যাশা ছিল ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করা।
"বড় হতে হতে অনুভব করছিলাম যে আমার মাইন্ডসেট মিডিয়ার দিকেই...আই থিঙ্ক, আই ওয়াজ অলওয়েজ কাইন্ড অফ প্রিপেয়ার্ড দ্যাট দ্যাটস হোয়াট আই ওয়ানা ডু, দিস ইজ মাই প্যাশন। আর এজন্য কী কী স্টেপ নিতে হবে, কী কী প্রিপারেশনের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে, আই ওয়াজ অলওয়েজ রেডী টু ডু অল দোজ।"
মিজ নাবিলা বলেন, বলিউড সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে বেশ কিছু প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিলো, পরবর্তীকালে 'মিশন এক্সট্রিমে' কাজ করতে গিয়ে সেই অভিজ্ঞতাগুলো কাজে লেগেছিলো।
একই সাথে 'মিশন এক্সট্রিম' ছবিটি সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশে এর আগে অনেক ভালো ভালো ছবির কাজ হয়েছে, কিন্তু এই ছবিটি টিপিক্যাল লাভ স্টোরি বা রোমান্টিক কমেডি ফিল্ম নয়, এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারার একটি ছবি, যেটা আমি বলবো যে বাংলাদেশে এরকম অ্যাকশন থ্রীলার ছবি এর আগে নির্মিত হয়নি।
"আমি স্ট্রংলি বলতে পারি, সানী ভাই (ছবির নির্মাতা সানী সানোয়ার) যেভাবে স্টোরিটা লিখেছেন, আর আমরা যেভাবে কাজ করেছি, আমাদের দেশের হিস্ট্রিতে আসলেই এমন ধরণের ছবি হয়নি কখনো।"
অস্ট্রেলিয়ায় থেকে বাংলাদেশের একটি বড় বাজেটের ছবিতে অভিনয় করতে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে সাদিয়া নাবিলা বলেন, আমরা যেই কাজগুলো বা যা আমরা অর্জন করতে চাই জীবনে তার সবকিছুই নির্ভর করে আমরা কীভাবে কাজগুলোকে অগ্রাধিকার দেবো, আমি যখন এই ছবিতে কাজের জন্য যুক্ত হই তখন আমি এর অংশ হয়ে গেছি এবং এটিকেই অগ্রাধিকার দিয়েছি, গত দুই বছরের শুটিংয়ে আমাকে যাওয়া আসার মধ্যেই থাকতে হয়েছে।
এই ছবির প্রধান পুরুষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন হালের জনপ্রিয় অভিনেতা আরিফিন শুভ। তার সাথে কাজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সাদিয়া নাবিলা বলেন, আমরা এই ছবির কাজের প্রথম দিন থেকেই একদম ছবির চরিত্রের মধ্যে ছিলাম, আমরা একে অপরকে ছবির চরিত্রের নাম ধরে ডাকতাম।
"আমি বলবো কো-আর্টিস্ট হিসেবে শুভ ভাই (আরিফিন শুভ) খুবই হেল্পফুল। উনি অনেক দিন ধরে কাজ করছেন, ওনার অনেক অভিজ্ঞতা, ওনার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি, উনি অনেক কিছু ইজিয়ার করে দিয়েছেন আমার জন্য।"
মিজ নাবিলা বলেন, ভবিষ্যতে তিনি অভিনয় অব্যাহত রাখতে চান, অভিনয় পেশায় থাকতে শতভাগ প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে চান।
অস্ট্রেলিয়ায় 'মিশন এক্সট্রিম' পরিবেশনের দায়িত্বে আছেন বঙ্গজ ফিল্মসের তানিম মান্নান।
'মিশন এক্সট্রিম' ছবিটি সম্পর্কে মি: মান্নান বলেন, সিনেমাটি বিনোদনের দৃষ্টিকোণ থেকে দর্শকদের কোনভাবেই হতাশ করবে না।
তিনি দর্শকদের বাংলা ছবির পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে বলেন, 'মিশন এক্সট্রিম' ছবিটি হয়তো বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একটি বড়ো জায়গা করে নেবে।
সাদিয়া নাবিলা এবং তানিম মান্নানের পুরো আলাপচারিতাটি শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন।
Follow SBS Bangla on FACEBOOK.