ক্রেতাদের কাছে অস্ট্রেলিয়ার 'বাই নাউ, পে লেটার' (এখন কিনুন, পরে মূল্য পরিশোধ করুন) সার্ভিসগুলোর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে, ২০১৮-১৯ সালে এই খাতে সর্বমোট ক্রয়ের পরিমাণটি ছিল ৫.৬ বিলিয়ন ডলার।
গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
- ২০১৮-১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার ক্রেতারা ৫.৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য কিনেছে 'বাই নাউ পে লেটার' ব্যবস্থায়
- এই ব্যবস্থায় আপনি ২০০ ডলার থেকে ৩০,০০০ ডলারের পণ্য কিনতে পারেন কারণ এগুলো ক্রেডিট আইনের বাইরে
- গত ১২ মাসে ২১ শতাংশ 'বাই নাউ পে লেটার' গ্রাহকরা কিস্তি দিতে ব্যর্থ হয়ে লেইট ফী দেয়ার ঝুঁকি বহন করছে
তবে এই ব্যবস্থায় উদ্বেগও আছে যে ক্রেতারা 'বাই নাউ, পে লেটার' - এই প্রক্রিয়ায় যখন একাধিক পণ্য কিনে তখন তারা তাদের ঋণগুলো সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খায় এবং অবশেষে আর্থিক দুর্দশায় পড়ে।
সুদমুক্ত সাপ্তাহিক বা মাসিক কিস্তি পরিশোধের মাধ্যমে কোন পেপারওয়ার্ক ছাড়াই একজোড়া জিন্স বা স্মার্টওয়াচ কিনতে পারা এখন দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
অস্ট্রেলিয়ার সিকিউরিটিস এন্ড ইনভেস্টমেন্ট কমিশনের (এএসআইসি) মতে ২০১৮-১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার ক্রেতারা ৫.৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য কিনেছে 'বাই নাউ পে লেটার' ব্যবস্থায়, একই সাথে ২৫ মিলিয়ন লোকসংখ্যার এই দেশে এধরণের সক্রিয় একাউন্টের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৬ মিলিয়নেরও বেশি।
ফিনান্সিয়াল কাউন্সেলিং অস্ট্রেলিয়ার সিইও ফিওনা গাথরি এই সব সার্ভিসের বিধিমালাগুলোর বিষয়ে ইতিবাচক সুপারিশ করছেন।
তিনি বলেন, "এই ব্যবস্থায় আপনি ২০০ ডলার থেকে ৩০,০০০ ডলারের পণ্য কিনতে পারেন কারণ এগুলো ক্রেডিট আইনের বাইরে।"
যদিও সুদমুক্ত কিস্তি পরিশোধের ব্যবস্থা ক্রেতাদের কাছে আকর্ষণীয় হলেও, তারা যদি কোন পেমেন্ট দিতে ব্যর্থ হয় তবে এজন্য বিপুল পরিমান চার্জ দিতে হয় লেইট ফী হিসেবে।
নভেম্বর ২০২০ সালে প্রকাশিত এএসআইসি'র রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ১২ মাসে ২১ শতাংশ 'বাই নাউ পে লেটার' গ্রাহকরা কিস্তি দিতে ব্যর্থ হয়ে লেইট ফী দেয়ার ঝুঁকি বহন করছে।
ক্যানবেরা ভিত্তিক আর্থিক পরামর্শদাতা ডেব শ্রুট কাজ করেন ন্যাশনাল ডেট হেল্পলাইনে। তিনি বলেন ভিন্ন ভিন্ন 'বাই নাউ পে লেটার' সার্ভিসদাতারা ভিন্ন ভিন্ন শর্ত জুড়ে দেয়।
ফিনান্সিয়াল কাউন্সেলিং অস্ট্রেলিয়ার ফিওনা গাথরি বলেন, একটি দৃশ্যমান ফাঁদ হচ্ছে আপনার সামর্থ্যের চেয়েও হয়তো আপনি অনেক খরচ করবেন, অথচ আপনি জানেনই না এটি আপনার ওপরে কি আর্থিক প্রভাব সৃষ্টি করবে।
ফিনান্সিয়াল কাউন্সেলর ডেব শ্রুট বলেন, যারা 'বাই নাউ পে লেটার' সার্ভিসের মাধ্যমে একাধিক কিস্তি পরিশোধের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, তারা একই সাথে বাড়ি বা গাড়ি কেনার জন্য হয়তো ঋণ নাও পেতে পারেন।
ন্যাশনাল ডেট হেল্পলাইনের ফিনান্সিয়াল কাউন্সেলর কিরস্টি রবসন বলেন, 'বাই নাউ পে লেটার' সার্ভিসের জন্য ক্রেতাদের জন্য যে সুরক্ষা থাকা উচিত তা নেই।
এএসআইসি রিপোর্টে আরো দেখা যায় যে কিস্তির অর্থ শোধ করতে না পেরে অনেকে তার নিত্যদিনের খরচ কমাতে বাধ্য হয়েছে যেমন, খাবার খরচ, বিল, বাড়ি ভাড়া, এবং অনেকে আরো ঋণ নিতে বাধ্য হয়েছেন।
মিজ রবসন বলেন, তারা প্রায়ই এসব বিষয়ের মুখোমুখি হন।
তিনি বলেন, 'বাই নাউ পে লেটার' সুবিধা নিতে গিয়ে মানুষ যেভাবে অর্থ পরিশোধের জালে আটকে পড়ে তাতে তারা নিত্য প্রয়োজনীয় খরচ বা ইউটিলিটি বিলগুলোও শোধ করতে পারে না; আর এধরণের সমস্যার কথা তাদের প্রায়ই শুনতে হয়।
কিরস্টি রবসন বলেন, অনেকেই ঋণের বিষয়গুলো গুছিয়ে নিতে পারছেন না বা আর্থিক সমস্যায় পড়েছেন; তিনি তাদের পেশাদারদের উপদেশ নেয়ার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে আরো তথ্য জানতে সরকারের মানি স্মার্ট ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।
এসবিএস বাংলার রেডিও অনুষ্ঠান শুনুন প্রতি সোমবার এবং শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় এবং আরও খবরের জন্য আমাদের ফেইসবুক পেইজটি ভিজিট করুন।
Follow SBS Bangla on FACEBOOK.
আরো দেখুন: