অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসী ও শরণার্থী নারীরা কর্মক্ষেত্রে যৌন উৎপীড়নের ঘটনায় নিশ্চুপ থাকেন: রিপোর্ট

Silhouette of a contemplative young woman enjoying a beautiful sunset

The study documented the experiences of more than 850 migrant and refugee women in Australia. Source: Getty / Cavan Images/Getty Images/Cavan Images RF

অস্ট্রেলিয়ায় কর্মক্ষেত্রে অভিবাসী এবং শরণার্থী নারীরা যৌন উৎপীড়নের সম্মুখীন হন। আর, এক্ষেত্রে উৎপীরকদের জবাবদিহিতা সামান্যই থাকে। নতুন একটি রিপোর্টে দেখা যায়, জরিপে অংশ নেওয়া নারীদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক সংখ্যকই বিগত পাঁচ বছরে যৌন উৎপীড়নের শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন।


কাজে যেতে ভয় লাগে, আবার কাজ হারানোর শঙ্কাও কাজ করে। অস্ট্রেলিয়ায় কর্মক্ষেত্রে যৌন উৎপীড়নের সম্মুখীন হওয়া অভিবাসী ও শরণার্থী নারীদেরকে প্রায়ই এ রকম অসহনীয় পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।

অস্ট্রেলিয়া’স ন্যাশনাল রিসার্চ অর্গানাইজেশন ফর উইমেন’স সেফটি বা ANROWS এর নতুন একটি রিপোর্টে দেখা গেছে, জরিপে অংশ নেওয়া ৮৫০ জনের অধিক অভিবাসী ও শরণার্থী নারীর মধ্যে ৪৬ শতাংশ, অর্থাৎ, প্রায় অর্ধেক সংখ্যকই বিগত পাঁচ বছরে কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

রিপোর্টটিতে আরও উঠে এসেছে যে, এটি সমাধানে খুব সামান্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
এই রিপোর্টটির লিড অথর হলেন ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্নের প্রফেসর মারি সিগ্রেইভ। তিনি বলেন, উৎপীড়নের উচ্চহারের বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ।

উৎপীড়ন বা হেনস্থা নানাভাবে করা হয়। যেমন, যৌন ইঙ্গিতময় ফোন কল বা মেসেজের মাধ্যমে, আড়চোখে কিংবা সরাসরি কুনজরে দেখার মাধ্যমে, কাম-লালসাপূর্ণ চাহনি, দৈহিক অবয়ব কিংবা একান্ত ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে প্রশ্ন করার মাধ্যমে।

বেশিরভাগ নারী যারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন তারা অভিজ্ঞতাগুলোকে কম গুরুতর বলে বর্ণনা করেছেন; তবে, সেগুলো ধারাবাহিকভাবে ঘটছে এবং নারীদের ওপর গুরুতর ও চলমান রূপে প্রভাব ফেলে।

এই অভিজ্ঞতাগুলো প্রায়ই বর্ণবাদ-সহ অন্যান্য ধরনের বৈষম্য বা কর্মক্ষেত্রে শোষণের সাথে মিলে যায় বলে জরিপটিতে নারীরা উল্লেখ করেন।

ড. বয়েড-কেইন বলেন, এর মানে হলো কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির রিপোর্ট করার বর্তমান ব্যবস্থা অভিবাসী এবং শরণার্থী নারীদের জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে।

তিনি বলেন, একজিট ইন্টারভিউ, অর্থাৎ, কাজ ছেড়ে চলে যাওয়ার সময়ে সাক্ষাৎকারের সময়সীমা কিংবা অভিযোগের সময়সীমা বাড়ানোর মতো ব্যবস্থাগুলো বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে নারীরা তাদের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারবে যখন তারা এটি করতে নিরাপদ বোধ করবে।

আসলে, অভিবাসী এবং শরণার্থী নারীরা এ রকম আচরণ সম্পর্কে রিপোর্ট করতে খুবই অনিচ্ছুক থাকে।
চাকুরি হারানোর ভয়ে কিংবা অতীতে এ রকম অভিযোগের পর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি দেখে নিপীড়িত নারীরা তাদের হেনস্থার কথা প্রকাশ করতে চায় নি বলে জানিয়েছে।

কোনো কোনো নারী জানিয়েছে যে, তাদেরকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল; চাকুরি হারানোর ভয়ে তারা রিপোর্ট করে নি।

প্রফেসর সিগ্রেইভ বলেন, কর্মক্ষেত্রের সংস্কৃতি এমনই যে, এটি প্রায়শই নারীদেরকে তাদের হেনস্থার অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশ করতে নিরুৎসাহিত করে।

২০৩২ সালের মধ্যে নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ করার জন্য সরকারের জাতীয় পরিকল্পনার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ANROWS।

এই পরিকল্পনার অগ্রগতি নিয়ে প্রথম বার্ষিক প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে গত ২১ আগস্ট।

লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতায় অবদান রাখার কারণ হিসেবে তরুণ পুরুষদের ওপর অনলাইন মিসোজিনি বা অনলাইনে নারীদের প্রতি দুর্বৃত্তায়নের প্রভাব সম্পর্কে গত ২১ আগস্ট ন্যাশনাল প্রেস ক্লাবে বক্তৃতা করেন ভায়োলেন্স কমিশনার মিকেলা ক্রোনিন।

প্রথম অগ্রগতি প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, সহিংস পুরুষদের সম্পর্কে আরও ভাল তথ্য দরকার সরকারের। সহিংসতার মধ্যে এবং বাইরে তাদের পন্থা সম্পর্কিত ভাল তথ্য দরকার। এছাড়া, এসবে হস্তক্ষেপের জন্য আরও নানা উপায়ের অন্বেষণও করতে হবে।

ড. বয়েড-কেইন আশা করেন, অভিবাসী এবং শরণার্থী নারীরা যেসব বাধার সম্মুখীন হন সেগুলো সম্পর্কে জাতীয় পরিকল্পনাকে অবহিত করার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে ANROWS এর রিপোর্টটি।

এই সমস্যার সমাধান বহুমুখী হতে হবে বলে সম্মত হন প্রফেসর সিগ্রেইভ।

তিনি বলেন, যথাযথভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে এই আচরণগুলো কীভাবে বৈষম্যের অন্যান্য রূপের সঙ্গে সম্পর্কিত হয়, তা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ।

প্রফেসর সিগ্রেইভ আরও বলেন যে, সমস্যাটি আরও ভালভাবে বোঝার জন্য অপরাধীদের এবং কর্ম-প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আরও গবেষণা করা প্রয়োজন।

বাংলায় সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
আপনি কি জানেন, এসবিএস বাংলা অনুষ্ঠান এখন ইউটিউব এবং এসবিএস অন ডিমান্ডে পাওয়া যাচ্ছে?

এসবিএস বাংলা এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেলের অংশ।

এসবিএস বাংলার আরও পডকাস্ট শুনতে ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট

এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুন প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে। এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে। ভিজিট করুন www.sbs.com.au/bangla.

আর, এসবিএস বাংলার পডকাস্ট এবং ভিডিওগুলো ইউটিউবেও পাবেন। ইউটিউবে সাবসক্রাইব করুন এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেল। উপভোগ করুন দক্ষিণ এশীয় ১০টি ভাষায় নানা অনুষ্ঠান। আরও রয়েছে ইংরেজি ভাষায় এসবিএস স্পাইস

Share
Follow SBS Bangla

Download our apps
SBS Audio
SBS On Demand

Listen to our podcasts
Independent news and stories connecting you to life in Australia and Bangla-speaking Australians.
Ease into the English language and Australian culture. We make learning English convenient, fun and practical.
Get the latest with our exclusive in-language podcasts on your favourite podcast apps.

Watch on SBS
SBS Bangla News

SBS Bangla News

Watch it onDemand