অস্ট্রেলিয়ার ২৮তম গভর্নর-জেনারেল হিসেবে মিজ সামান্থা মোস্টিনের নাম ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থোনি অ্যালবানিজি।
রাজা চার্লস এই নিয়োগ অনুমোদন করেছেন। বর্তমান গভর্নর-জেনারেল ডেভিড হার্লের স্থলে মিজ সামান্থা তার দায়িত্ব গ্রহণ করবেন পহেলা জুলাইয়ে।
একজন সামরিক কর্মকর্তার মেয়ে মিজ মোস্টিন বলেন, তিনি অনেক সম্মানিত বোধ করছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী পল কিটিং-এর উপদেষ্টা ছিলেন সাবেক এই আইনজীবি। জেন্ডার ইকোয়ালিটি নিয়ে কাজ করায় অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন তিনি।
রিকনসিলিয়েশন অস্ট্রেলিয়া, বিয়ন্ড ব্লু এবং ভার্জিন-এর বোর্ড মেম্বার ছিলেন তিনি। আর এখন সরকারের উইমেন’স ইকনোমিক ইকোয়ালিটি টাস্কফোর্স-এর চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন।
মিজ মোস্টিনের নেতৃত্বের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থোনি অ্যালবানিজি আশা প্রকাশ করেন যে, তিনি তার দায়িত্ব যথাযোগ্যভাবে পালন করবেন।
বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ান সমাজে ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের প্রাসঙ্গিকতা কতটুকু? ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের প্রতিনিধি হিসেবে গভর্নর-জেনারেলের ভূমিকা কী? কেউ কেউ এ রকম প্রশ্ন করেন।
এই ইস্যুটি নিয়ে ১৯৯৯ সালে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। অস্ট্রেলিয়ার ভোটাররা তখন রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
এদিকে, মিজ মোস্টিন এর নিয়োগকে স্বাগত জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান রিপাবলিক মুভমেন্টের কো-চেয়ার ক্রেইগ ফস্টার।
তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়া যদি রিপাবলিকে পরিণত হয়, তাহলে মিজ মোস্টিন একজন চমৎকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করবেন।
তবে, গত বছর ভয়েস রেফারেন্ডামে ব্যর্থ হওয়ার পর, মিস্টার অ্যালবানিজি বলেন, ‘রিপাবলিক’ ইস্যু নিয়ে আর কোনো গণভোটের আয়োজন করার কোনো পরিকল্পনা তার নেই।
রাজার প্রতিনিধি হিসেবে গভর্নর-জেনারেলের ভূমিকা হবে দৈনন্দিন রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন দায়-দায়িত্ব আলঙ্কারিক ও আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করা। যেমন, গণভোটের প্রস্তাব দাখিল করা, কোনো আইন প্রণয়ন বা ঘোষণার প্রকীর্তন করা।
সংসদ ডাকা, মুলতুবি করা এবং সংসদ ভেঙ্গে দেওয়া তার ক্ষমতার মধ্যে পড়ে। এছাড়া, মন্ত্রীদের নিয়োগ ও বরখাস্ত করার ক্ষমতাও তার রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থোনি অ্যালবানিজি বলেন, গভর্নর-জেনারেল দেশ ও জাতির সেবা করেন, তিনি অস্ট্রেলিয়ানদের সমস্ত অর্জনকে আলোকিত করেন।
গভর্নর-জেনারেলের বেশিরভাগ কাজ আনুষ্ঠানিক হলেও, তিনি এমনকি একজন প্রধানমন্ত্রীকেও বরখাস্ত করার ক্ষমতা রাখেন।
অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে মাত্র একবারই এই ক্ষমতার প্রয়োগ ঘটতে দেখা গেছে।
১৯৭৫ সালে, প্রধানমন্ত্রী গফ হুইটলামকে বরখাস্ত করেন তৎকালীন গভর্নর-জেনারেল জন কার। সেটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম নাটকীয় একটি ঘটনা।
অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির হিস্টোরি ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ফ্রাঙ্ক বনজর্নো বলেন, গভর্নর-জেনারেলের ভূমিকায় পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা হয়েছে।
গভর্নর-জেনারেলের নিয়োগের বিষয়টি একেবারে অবিতর্কিত নয়। মূলত প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশক্রমেই গভর্নর-জেনারেল নিয়োগ করা হয়ে থাকে।
ফার্স্ট নেশন্স বিষয়ক এবং ইনডিজেনাস ভয়েস টু পার্লামেন্টের পক্ষে মিজ মোস্টিনের দেওয়া আগের বিবৃতিগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অ্যাডভান্স নামের একটি কনজারভেটিভ লবি গ্রুপ।
২৬ জানুয়ারি নিয়ে NITV এর একটি অনুষ্ঠানের প্রশংসা করে ২০২০ সালে তিনি একটি টুইট করেছিলেন। সম্প্রতি এটি ডিলিট করা হয়েছে।
মিজ মোস্টিন বলেন, তিনি একমাত্রিক নন। নতুন ভূমিকায় তিনি তার বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করছেন।
প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
এসবিএস রেডিও সম্প্রচার-সূচী হালনাগাদ করেছে, এখন থেকে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার, বিকাল ৩টায়, এসবিএস পপদেশীতে আমাদের অনুষ্ঠান শুনুন, লাইভ।
কিংবা, পুরনো সময়সূচীতেও আপনি আমাদের অনুষ্ঠান শোনা চালিয়ে যেতে পারেন। প্রতি সোম ও শনিবার, সন্ধ্যা ৬টায়, এসবিএস-২ এ।

৫ অক্টোবর থেকে নতুন চ্যানেলে ও নতুন সময়ে যাচ্ছে SBS Bangla Credit: SBS