ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাবে সমর্থন দিতে ব্যর্থ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

Press Encounter by Betsa Mariana, Deputy Foreign Minister of Ukraine

Mariana Betsa, Deputy Foreign Minister of Ukraine speaks to the press before the start of Security Council at UN Headquarters in New York on Februray 24, 2025. Security Council held the meeting on 3rd anniversary of full scale invasion of Russia into Ukraine as war still going on. (Photo by Lev Radin/Sipa USA) Source: SIPA USA / Lev Radin/Lev Radin/Sipa USA

ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে এই যুদ্ধের নিন্দা জানিয়ে সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে জাতিসংঘ। এতে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছিল না। এদিকে, ইওরোপীয় নেতারা নতুন করে শান্তির আশা প্রকাশ করেছেন, যা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফল বলে ধারণা করা হচ্ছে।


রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের তিন বছর পর, ক্রেমলিনের নিন্দা জানিয়ে সংঘাতের অবসানের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ।

ইউক্রেন ও ইওরোপীয় দেশগুলোর খসড়া করা এই প্রস্তাবটি পাশ হয়েছে। এর পক্ষে ৯৩টি এবং বিপক্ষে ১৮টি ভোট পড়েছিল। আর, ভোটদানে বিরত ছিল ৬৫টি দেশ।

ইউক্রেনের উপ-পররাষ্ট্র-মন্ত্রী মারিয়ানা বেতসা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বলেছেন যে, আগ্রাসনকে নিন্দা জানানো উচিত, পুরস্কৃত নয়। তিনি সতর্ক করে বলেন যে, যদি ইউক্রেন পতিত হয়, তবে কোনো দেশই নিরাপদ থাকবে না।

তিনি সেই দেশগুলোর প্রতি ধন্যবাদ জানান, যারা ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে।

যেভাবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধের ভূ-রাজনীতিকে মৌলিকভাবে পরিবর্তন করছেন, তার প্রতিফলন হিসেবে ইওরোপ ও ইউক্রেনের খসড়া করা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এতে যোগ দিয়েছে রাশিয়া, বেলারুশ, ইসরায়েল ও উত্তর কোরিয়া-সহ অন্যান্য কিছু দেশ।
রাশিয়ার আক্রমণকারী ভূমিকাকে কম গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করে যুক্তরাষ্ট্র একটি পাল্টা প্রস্তাবও খসড়া করেছিল। তবে, ইওরোপীয় দেশগুলো সফলভাবে এই প্রস্তাবটি সংশোধন করতে সক্ষম হয়; যেখানে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মান রেখে একটি ন্যায্য, স্থায়ী এবং সামগ্রিক শান্তির প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

শেষ পর্যন্ত, নিজস্ব ভোট থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করা হয় যুক্তরাষ্ট্রকে।

জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত, ডরোথি ক্যামিল শে, ওয়াশিংটনের অবস্থান তুলে ধরেন এবং তারা কী অর্জন করতে চেয়েছিল তা ব্যাখ্যা করেন।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রস্তাবগুলো এসেছে যখন যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধের সমাপ্তির জন্য প্রচেষ্টা তীব্র করছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন যে, তিনি বিশ্বাস করেন শান্তি চুক্তি কাছাকাছি।

তবে, শান্তির পথে অগ্রসর হওয়ার পরিবর্তে, জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেঞ্জিয়া ইউক্রেনকে দোষারোপ করার চেষ্টা করেছেন।

এই মন্তব্যগুলো আংশিকভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি; যিনি ইউক্রেন বা ইওরোপের সম্পৃক্ততা ছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য আলোচনা শুরু করেছিলেন।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলার পর, মিস্টার ট্রাম্প এবং তার দল ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার বিরোধিতা করেছেন এবং যুক্তি দেখিয়েছেন যে, দেশটির সম্ভবত কিছু অঞ্চল ত্যাগ করতে হতে পারে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে “একজন স্বৈরশাসক” বলেও উল্লেখ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। তিনি ইঙ্গিত করেছেন যে, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্স “ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য কিছুই করে নি”।
এই সপ্তাহে, উক্ত দুই দেশের নেতারা ওয়াশিংটনে সফর করছেন। প্রথমে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। তিনি মিস্টার ট্রাম্পের সঙ্গে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

উত্তপ্ত বক্তব্যের মধ্যেও, মিস্টার ম্যাখোঁ বলেছেন যে, আলোচনা একটি মাইলফলকে পৌঁছেছে।

এর আগে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার একটি অনুরূপ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন যে, মিস্টার ট্রাম্প ইউক্রেন সম্পর্কে বৈশ্বিক আলোচনা “ভালভাবে পরিবর্তন” করেছেন।

এদিকে, মিস্টার স্টারমার রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন।

এটি আবারও ট্রান্স-আটলান্টিক শক্তির মধ্যে বিভেদের ইঙ্গিত দেয়। কারণ, ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া সামরিক সাহায্য পরিশোধ করার জন্য চাপ দিচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এজন্য, ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ-সম্পদে প্রবেশাধিকার চায় যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের এই নাটকীয় পরিবর্তনের মধ্যেও, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি নতুন করে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন যে, যুদ্ধ শিগগিরই শেষ হবে।

নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদানের ক্ষেত্রে ইওরোপীয় নেতৃবৃন্দের ক্রমবর্ধমান খোলামেলা মনোভাবকে স্বাগত জানিয়েছেন মিস্টার জেলেনস্কি।

ন্যাটো এবং ইওরোপীয় ইউনিয়নে ইউক্রেনকে যোগদানের সুযোগ দেওয়ার জন্যও আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

এদিকে, তার এই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ইওরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট অ্যান্তোনিও কোস্তা; কিইভ যাতে শান্তি আলোচনা শুরুর জন্য টেবিলের কাছে আসতে পারে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন যে, তিনি শীঘ্রই ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করবেন। এই মুহূর্তে, এটি স্পষ্ট নয় যে, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সেই টেবিলের কাছে বসবেন কিনা।

সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ার বাটনে ক্লিক করুন।

এসবিএস বাংলার আরও পডকাস্ট শুনতে ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট

আপনি কি জানেন, এসবিএস বাংলা অনুষ্ঠান এখন ইউটিউব এবং এসবিএস অন ডিমান্ডে 
পাওয়া যাচ্ছে?

এসবিএস বাংলা এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেলের অংশ।

এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুন প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে। এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে। ভিজিট করুন www.sbs.com.au/bangla

আর, এসবিএস বাংলার পডকাস্ট এবং ভিডিওগুলো ইউটিউবেও পাবেন। ইউটিউবে সাবসক্রাইব করুন এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেল।

উপভোগ করুন দক্ষিণ এশীয় ১০টি ভাষায় নানা অনুষ্ঠান। আরও রয়েছে ইংরেজি ভাষায় এসবিএস স্পাইস


Share
Follow SBS Bangla

Download our apps
SBS Audio
SBS On Demand

Listen to our podcasts
Independent news and stories connecting you to life in Australia and Bangla-speaking Australians.
Ease into the English language and Australian culture. We make learning English convenient, fun and practical.
Get the latest with our exclusive in-language podcasts on your favourite podcast apps.

Watch on SBS
SBS Bangla News

SBS Bangla News

Watch it onDemand