আজকের আধুনিক বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে ক্লাইমেট চেঞ্জ বা জলবায়ু পরিবর্তন। এ নিয়ে চলতে থাকা নানা বিতর্কের মধ্যে জানানো হচ্ছে ক্লাইমেট এমার্জেন্সির আহবান। 'জলবায়ু পরিবর্তন' আসলে কী? এনিয়ে আমরা কথা বলেছি ইউনিভার্সিটি অফ এডিলেডের জিওগ্রাফি, এনভায়রনমেন্ট এন্ড পপুলেশন বিভাগের শিক্ষক ডঃ মোহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে।
জলবায়ু পরিবর্তন, এর প্রভাব এবং এই পরিববর্তন মোকাবেলা করতে কি করণীয় এ নিয়ে পরিবেশ বিজ্ঞানী ডঃ মোহাম্মদ ইউনূসের দুটি গ্রন্থ এবং বেশ কিছু আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন জার্নালে।
তিনি বলেন, "জলবায়ু পরিবর্তন এখন একটি বিজ্ঞানে পরিণত হয়েছে। এ সম্পর্কে জানতে গেলে গ্রীন হাউস গ্যাস সম্পর্কে জানাটা জরুরি, এই গ্যাস বায়ুমণ্ডলের জলীয় বাস্প, কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড এবং ওজোন স্তরকে প্রভাবিত করে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের সূচনা করে; আর এর সরাসরি প্রভাবে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই শতাব্দীতে যদি ভূ-পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রীও বেড়ে যায় তবে যে ফলাফল দাঁড়াবে তাকেই জলবায়ু পরিবর্তন বলা হচ্ছে।"
"এই সমস্যা নিয়ে দীর্ঘ চার দশক ধরে সমীক্ষা চলছে। দীর্ঘ গবেষণার পর ক্লাইমেট চেঞ্জ এখন বৈজ্ঞানিকভাবে সমাদৃত হয়েছে। জেনেভা কনভেনশন, কিয়োটো প্রটোকল, এবং প্যারিস এগ্রিমেন্টে এই সমস্যাটিকে 'এলার্মিং' বা ভীতিকর বলে চিহ্নিত করে হয়েছে।"
এটা কি 'পার্ট অফ ন্যাচারাল সাইকেল' বা প্রাকৃতিক ? এর জবাবে ডঃ মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, "এটা কে ন্যাচারাল সাইকেল বলা হলেও, পরিবেশ বিজ্ঞানীরা মূলত মানুষের কর্মকান্ডকেই দায়ী করেছেন।"
"বিশ্বের বিভিন্ন পরিবেশ বিষয়ক সম্মেলন এবং রিপোর্টে অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বলে হয়েছে যে ভূ-পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়ছে। তবে অল্প কিছু সংখ্যক বিজ্ঞানী ভিন্নমত প্রকাশ করে বলেছেন জলবায়ু পরিবর্তন প্রাকৃতিক, এটা ঘটবে এবং প্রকৃতিই পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনবে।"
"জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে 'ক্লাইমেট ইমার্জেন্সি' বা জলবায়ু দুর্যোগ বলে অভিহিত করা হয়েছে। কারণ তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে হিটওয়েভ, ডিহাইড্রেশন, বিশ্বব্যাপী ভেক্টর বর্ন ডিজিজ বিশেষ করে ডেঙ্গু রোগ ছড়িয়ে পড়া, সাইক্লোন, হারিকেন ইত্যাদি বার বার ঘটছে, সবচেয়ে বড় প্রভাব হচ্ছে ওয়াটার সিকিউরিটি বা পানীয় জল, কৃষি তথা সার্বিক অর্থনীতির ওপর চাপ।"
"জলবায়ু পরিবর্তন থেকে নিষ্কৃতি পেতে হলে স্থানীয় ভাবে ট্রান্সফর্ম এডাপটেশন জরুরি, বিজ্ঞানকে মানুষ এবং নীতিনির্ধারণে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এছাড়া কমিউনিটি বেসড এডাপটেশন যেমন, কৃষি এবং সুপেয় পানির ক্ষেত্রে হতে পারে। আমি দীর্ঘদিন ধরে এই বিষয়ে কাজ করছি।"
"বাংলাদেশ, মালদ্বীপ বা এশিয়া প্যাসিফিকের বিভিন্ন দ্বীপ দেশে ইন্ডিজিনাস টেকনিকগুলো খুঁজে সেই অনুযায়ী ট্রান্সফর্ম এডাপটেশনের সুবিধা গুলো নিশ্চিত করতে হবে।"
পুরো সাক্ষাৎকারটি শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন
Follow us on https://business.facebook.com/SBSBangla