অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিতে দক্ষ কর্মীদের অভাব রয়েছে। তবে, নতুন একটি গবেষণায় দেখা গেছে, অভিবাসীদের ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিফিকেশন্স অর্থাৎ, অস্ট্রেলিয়ার বাইরে থেকে অর্জিত শিক্ষাগত যোগ্যতার স্বীকৃতি প্রদানের ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া যথার্থ ভূমিকা পালন করতে পারছে না।
কমিটি ফর ইকনোমিক ডেভেলপমেন্ট অব অস্ট্রেলিয়া (CEDA) বা সিডা-র একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইংরেজি ভাষায় দুর্বলতা এবং কর্মীদের দক্ষতার স্বীকৃতি লাভের অভাবে এবং এসবের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে অভিবাসীরা অস্ট্রেলিয়ায় কর্মক্ষেত্রে যথার্থ অবদান রাখতে পারছে না।
রিপোর্টটিতে সুপারিশ করা হয়েছে ইংরেজি ভাষা শিক্ষণের ক্ষেত্রে সুযোগ বাড়ানোর জন্য। এছাড়া, যোগ্যতা ও কর্ম-দক্ষতার স্বীকৃতি প্রদানের ক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটাতে ও বৈষম্য এবং পূর্বসংস্কার প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।
READ MORE

ইংরেজিতে দক্ষতা বাড়াতে যা করণীয়
মিস্টার বার্কার বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেওয়া কর্মীদের তুলনায় সম্প্রতি আগমনকারী অভিবাসীরা অনেক কম উপার্জন করেন। আর, সময়ের সাথে সাথে এই পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।
ফলে, বহুল সংখ্যক অভিবাসীও তাদের দক্ষতার স্তরের চেয়ে নিচু স্তরে কাজ করছে।
নিউ সাউথ ওয়েলসের নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক এবং সেন্টার অব ফুল এমপ্লয়মেন্টের ডাইরেক্টর বিল মিচেল বলেন, অস্ট্রেলিয়ার বাইরে থেকে অর্জিত যোগ্যতা ও দক্ষতার মূল্যায়নে ও স্বীকৃতি প্রদানের ক্ষেত্রে আরও বেশি নমনীয়তা থাকা প্রয়োজন।
রিপোর্টটিতে বলা হয়েছে, অভিবাসীরা যেন অভিবাসনের পর প্রথম কয়েক বছরের মাঝেই তাদের দক্ষতা কাজে লাগাতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। আর, এই বিষয়টি অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিতে বিদ্যমান সমস্যা, দক্ষ কর্মীর অভাব পূরণে সহায়ক হবে।
ছয় বছর বা তার চেয়ে কম সময় ধরে অস্ট্রেলিয়ায় বাস করা অভিবাসীরা অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেওয়া কর্মীদের তুলনায় গড়ে ১০ শতাংশ কম উপার্জন করে।
মিস্টার বার্কার বলেন, প্রশিক্ষণের সঙ্গে সম্পর্কিত দু’টি বিষয়ে জোর দিতে হবে। এগুলো হলো যোগ্যতা ও দক্ষতার স্বীকৃতি এবং ইংরেজি ভাষা শিক্ষা।
অস্ট্রেলিয়ায় নবাগত অভিবাসীদেরকে বসবাসের ক্ষেত্রে, ইংরেজি শিক্ষার ক্ষেত্রে এবং কর্মসংস্থানের জন্য সহায়তা করে AMES বা (এইমস) অস্ট্রেলিয়া নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এর সিইও ক্যাথেরিন স্কার্থ বলেন, দক্ষ অভিবাসীদের মাঝে অনেকেরই ইংরেজি ভাষার সকল ক্ষেত্রে সমান দক্ষতা থাকে না। কেউ ভাল ইংরেজি বলেন কিন্তু ভাল লিখতে পারেন না।
পোস্ট-গ্রাজুয়েট ডিগ্রিধারী অভিবাসী নারীদের অবস্থা ভাল নয়। একই স্তরের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেওয়া কর্মীদের থেকে প্রায় এক তৃতীয়াংশ কম উপার্জন করেন তারা।
ক্যাথেরিন স্কার্থ বলেন, পুরুষদের ক্ষেত্রেও নানা রকম প্রতিবন্ধকতা দেখা যায়। তবে, গৃহস্থালী নানা দায়িত্ব পালনের কারণে নারীদের কর্মসংস্থানে এবং যথাযথ কাজ পেতে দেরি হয়।
মূল আবেদনকারী হিসেবে নয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় এদেশে নারীরা আসেন তাদের স্বামীর সঙ্গে নির্ভরশীল হিসেবে। ভিসা লাভের জন্য তাদের ইংরেজিতে দক্ষতার প্রয়োজন হয় না। সেজন্য, তাদের ইংরেজি দক্ষতা সেই রকম উচ্চ পর্যায়ে থাকে না এবং পরবর্তীতে তা প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখা দেয়, বলেন মিজ স্কার্থ।
দক্ষ অভিবাসীদের প্রতি লক্ষ্য রেখে আরও বেশি অরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের ব্যবস্থার প্রতি জোর দেন মিজ স্কার্থ। তারা যখন এদেশে আসে কিংবা আসার পূর্বেই যেন এ সব ব্যবস্থা করা হয়, বলেন তিনি।
প্রফেসর বিল মিচেল বলেন, তিনি চান যে, অভিবাসীদের পাশাপাশি এদেশে জন্ম নেওয়া অধিবাসীদের প্রশিক্ষণে সরকার যেন এগিয়ে আসে। এক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য করতে চান না তিনি।
প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
এসবিএস রেডিও সম্প্রচার-সূচী হালনাগাদ করেছে, এখন থেকে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার, বিকাল ৩টায়, এসবিএস পপদেশীতে আমাদের অনুষ্ঠান শুনুন, লাইভ।
কিংবা, পুরনো সময়সূচীতেও আপনি আমাদের অনুষ্ঠান শোনা চালিয়ে যেতে পারেন। প্রতি সোম ও শনিবার, সন্ধ্যা ৬টায়, এসবিএস-২ এ।

৫ অক্টোবর থেকে নতুন চ্যানেলে ও নতুন সময়ে যাচ্ছে SBS Bangla Credit: SBS