মেক্সিকো, কানাডা এবং চীনের পণ্যের উপর ট্রাম্পের ব্যাপক শুল্ক আরোপ, নিজেদের বিষয়ে কী ভাবনা অস্ট্রেলিয়ার?

Canada Tariffs Alcohol

A B.C. Liquor Store employee demonstrates removing bottles of American whiskey for media before a news conference in Vancouver, B.C., Sunday, Feb. 2, 2025. (Ethan Cairns/The Canadian Press via AP) Source: The Canadian Press / ETHAN CAIRNS/AP

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প মেক্সিকো, কানাডা এবং চীন থেকে তার দেশে আমদানি পণ্যের উপর বড় ধরণের নতুন শুল্ক আরোপের আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, এতে বিশ্ব বাণিজ্যে বার্ষিক কয়েক ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হতে পারে।


ট্রাম্পের ব্যাপক শুল্কনীতির প্রতিক্রিয়ায় কানাডা এবং মেক্সিকো তাদের নিজস্ব পাল্টা শুল্ক দিয়ে বাণিজ্য লড়াইয়ে নামতে পারে এমন প্রতিশ্রুতিতে উত্তেজনা বেড়েছে।

এদিকে, অস্ট্রেলিয়া বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলের প্রভাবের ক্ষতি মোকাবেলায় প্রস্তুত হচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলছেন, "মেক্সিকো এবং কানাডা কখনোই বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমাদের জন্য ইতিবাচক ছিল না। তারা বাণিজ্যে আমাদের সাথে খুব অন্যায় আচরণ করেছে, এবং আমরা খুব দ্রুত তা পূরণ করতে সক্ষম হব কারণ আমাদের তাদের পণ্যগুলির প্রয়োজন নেই।"

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প মেক্সিকো, কানাডা এবং চীন থেকে পণ্যের উপর ব্যাপক শুল্কের আদেশ দেওয়ার পরে (তার দেশের) প্রচুর সম্পদ নিয়ে গর্ব করছেন।

ফলাফল: একটি বাণিজ্য যুদ্ধ যা বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে এবং মুদ্রাস্ফীতিকে বাড়িয়ে তুলতে পারে - যদিও মিঃ ট্রাম্পের মতে তা নয়।

মেক্সিকো এবং কানাডা, শীর্ষ দুই মার্কিন বাণিজ্য অংশীদার, অবিলম্বে তাদের নিজস্ব প্রতিশোধমূলক শুল্কের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন যে কানাডা বিয়ার, ওয়াইন, কাঠ এবং যন্ত্রপাতি সহ ২৫২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যের বিপরীতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে।

আর এটি হবে আমেরিকান শ্রমিক শ্রেণীর জন্য সতর্কবার্তা।
তিনটি নির্বাহী আদেশে, মিঃ ট্রাম্প ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া মেক্সিকান এবং বেশিরভাগ কানাডিয়ান আমদানির পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ এবং চীনের পণ্যের উপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তিনি শুল্ক আরোপের প্রতিশ্রুতি দেন।

ফেন্টানাইল ড্রাগ নিয়ে তিনি যে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন তারও অবসান চান।

এদিকে মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শিনবাউম বলেছেন যে ড্রাগ কার্টেলগুলির মেক্সিকান সরকারের সাথে জোট রয়েছে এমন অভিযোগ নিন্দনীয় – এই পয়েন্টটিই মিঃ ট্রাম্পের প্রশাসন শুল্ককে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য ব্যবহার করেছে।

শিনবাউম বলেছেন যে তার সরকার তাদের শীর্ষ বাণিজ্য অংশীদারের (যুক্তরাষ্ট্র) সাথে সংলাপ চেয়েছে কিন্তু তিনি কথিত প্ল্যান বি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন।

কিন্তু একজন বিশ্লেষক বলেছেন যে এই পদক্ষেপের সাথে মারাত্মক ড্রাগ ওপিওডের কোন সম্পর্ক নেই, বিশেষ করে চীনের ক্ষেত্রে।

ইনার টাঙ্গেন হলেন তাইহে ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো।

তিনি বলছেন, আমার মনে হয় ডনাল্ড ট্রাম্প চীনকে শাস্তি দিতে চায়, বিচ্ছিন্ন করতে চায়। আর এজন্য তিনি এই ইস্যুটি ব্যবহার করছেন।

চীন বলেছে যে তারা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় ট্রাম্পের পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করবে এবং অন্যান্য পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।

অস্ট্রেলিয়ায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বলেছেন যে অস্ট্রেলিয়া সবসময়েই যে কোন নেতিবাচক প্রভাবের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

তিনি বলছেন, "প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবেন বলে বলেছিলেন, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। স্পষ্টতই এটি বিশ্ববাজারকে প্রভাবিত করবে এবং আমরা তা বুঝতে পারি। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের মাধ্যমে এটি মোকাবেলা করব।"

বুহুই কিউ হলেন ইউনিভার্সিটি অফ সিডনি বিজনেস স্কুলের বিজনেস অ্যান্ড ফাইন্যান্সের অধ্যাপক। তিনি বলেন যে মোকাবেলার পন্থায় যথেষ্ট কাজ নাও হতে পারে - এর পরিবর্তে তিনি অর্থনৈতিকভাবে টিকে থাকতে কর্মসূচি নেয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলছেন "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে এই ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের জন্য আমরা শুল্কের উপর ছাড় নাও পেতে পারি। অস্ট্রেলিয়ার কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৪০ বিলিয়ন ডলার বেশি পণ্য রপ্তানি করে, কানাডার কাছে প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলার, এরপরেও কানাডা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হয়েও ছাড় পায়নি। আমি মনে করি না তারা আমাদের ছাড় দেবে।"

ন্যাশনালস নেতা ডেভিড লিটলপ্রউড একটু ভিন্ন সুরে বলছেন, "এ বিষয়ে সতর্ক থাকা সত্ত্বেও, অস্ট্রেলিয়া কিছু সেক্টরে জিততে পারে।"

রিচার্ড হোল্ডেন হলেন সায়েন্টিয়া ইউএনএসডব্লিউ বিজনেস স্কুলের অর্থনীতির অধ্যাপক। তিনি অবশ্য বলেন ফলাফল ইতিবাচকের চেয়ে নেতিবাচক বেশি হতে পারে।

এবং বিরোধী দল আবার এটি ভিন্নভাবে নিচ্ছে।

ফ্রন্টবেঞ্চার মাইকেলিয়া ক্যাশ টুডে শো'তে মি: ট্রাম্প সম্পর্কে বলছেন, "তিনি দেখিয়ে দিচ্ছেন যে তিনি একজন করিৎকর্মা ব্যক্তি। তিনি আমেরিকান জনগণের দ্বারা নিরঙ্কুশভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি রাষ্ট্রপতি পদ, হাউস এবং সিনেটে জিতেছেন। আমেরিকান জনগণ যা প্রত্যাশা করে, তিনি তাই করছেন। পিটার ডাটন সরকারের সাথেও ঠিক একই ব্যাপার ঘটবে এবং আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে পারি, গতবারের মতো, আমরা ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে সফলভাবে কাজ করব।"

বিঃ দ্রঃ এই প্রতিবেদন লেখার সময় জানা যাচ্ছে যে, ট্রাম্প প্রশাসন কানাডা এবং মেক্সিকোর উপর আরোপিত শুল্ক এক মাসের জন্য বিলম্বিত করেছেন। দেশ দুটি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তাদের সীমান্ত নিরাপত্তা জরদার করবে এমন সিদ্ধান্তে রাজি হয়েছে। তবে চীনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের কোন পরিবর্তন হয়নি।

সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ার বাটনে ক্লিক করুন।

এসবিএস বাংলার আরও পডকাস্ট শুনতে ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট

আপনি কি জানেন, এসবিএস বাংলা অনুষ্ঠান এখন ইউটিউব এবং এসবিএস অন ডিমান্ডে পাওয়া যাচ্ছে?

এসবিএস বাংলা এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেলের অংশ।

এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুন প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে। এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে। ভিজিট করুন www.sbs.com.au/bangla

আর, এসবিএস বাংলার পডকাস্ট এবং ভিডিওগুলো 
ইউটিউবেও পাবেন। ইউটিউবে সাবসক্রাইব করুন এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেল।

উপভোগ করুন দক্ষিণ এশীয় ১০টি ভাষায় নানা অনুষ্ঠান। আরও রয়েছে ইংরেজি ভাষায় এসবিএস স্পাইস



Share
Follow SBS Bangla

Download our apps
SBS Audio
SBS On Demand

Listen to our podcasts
Independent news and stories connecting you to life in Australia and Bangla-speaking Australians.
Ease into the English language and Australian culture. We make learning English convenient, fun and practical.
Get the latest with our exclusive in-language podcasts on your favourite podcast apps.

Watch on SBS
SBS Bangla News

SBS Bangla News

Watch it onDemand