গুরুত্বপূর্ণ দিক
- ছয় বছর আগে চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার কোনো নেতার শেষবার দেখা হয় ২০১৬ সালে
- চীনের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি ঘটে মূলত ২০২০ সালে, যখন চীন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা জারি করে
- "শি জিনপিংয়ের অধীনে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ব্যাপকভাবে উন্নত হয়েছে"
বালির ওই বৈঠকটিকে কেউ কেউ যুগান্তকারী ঘটনা হিসাবে বর্ণনা করছেন, আশা করছেন এটি চীন এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সম্পর্কের মধ্যে বরফ গলার সূচনার হতে পারে।
ছয় বছর আগে চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার কোনো নেতার শেষবার দেখা হয় ২০১৬ সালে। সেসময় প্রেসিডেন্ট শি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুলের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
মি. আলবানিজি বলেছেন এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
চীনের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি ঘটে মূলত ২০২০ সালে, যখন চীন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বছরে ২০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ওয়াইন, বার্লি এবং রক লবস্টার রপ্তানির মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্যগুলির জন্য চীনের বাজার হারায় অস্ট্রেলিয়া।
মি. আলবানিজি এই বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞাগুলি খুব দ্রুত পরিবর্তন হবে এমন মনে না করলেও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের চ্যালেঞ্জগুলি কাটিয়ে উঠতে তিনি আত্মবিশ্বাসী।
তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে থেকেই ধারাবাহিকভাবে বলে আসছি - আমরা যেখানেই পারি সহযোগিতা করব, প্রয়োজন হলে দ্বিমত পোষণ করব। তবে আমাদের অবশ্যই জাতীয় স্বার্থে কাজ করতে হবে।
৩২ মিনিটের সংলাপের সময়, মি. আলবানিজি বলেছেন যে তিনি কিছু বিষয় উত্থাপন করেছেন যা চীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছিল।
এর মধ্যে ছিল জিনজিয়াং-এ মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগ, তাইওয়ানের সাথে স্থিতাবস্থা বজায় রাখা এবং চীনে অস্ট্রেলিয়ান সাংবাদিক চুং লেই এবং লেখক ইয়ং হেন-জুংকে আটক করা।
তিনি বলেন, আমাদের সিস্টেম চীনা সিস্টেম থেকে ভিন্নভাবে কাজ করে। আমরা মুক্ত গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। এদিকে, চীনা প্রেসিডেন্ট মি. আলবানিজিকে তার নির্বাচনে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং বলেছেন দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ।
প্রেসিডেন্ট শি বলেছেন, চীন-অস্ট্রেলিয়া সম্পর্ক “লালিত হওয়ার যোগ্য”।
মি. আলবানিজির উদ্দেশ্যে প্রেসিডেন্ট শি বলছেন "আপনি বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে চীন-অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কের বিষয়ে বেশ কয়েকটি মন্তব্য করেছেন এবং বারবার বলেছেন যে আপনি চীন-অস্ট্রেলিয়া সম্পর্ককে পরিপক্কভাবে মোকাবেলা করবেন। আমি আপনার মতামতকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিই।"
তিনি উল্লেখ করেছেন যে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সম্পর্ক কঠিন হয়ে পড়েছিল এবং তিনি অস্ট্রেলিয়াকে সম্পর্ক গড়ে তোলা, বজায় রাখা এবং বিকাশের আহ্বান জানিয়েছেন।
অনেকে প্রশ্ন করছেন যে এতে চীন ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করতে পারে কিনা।
গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটির এশিয়া ইনস্টিটিউটের রোয়ান ক্যালিক নাইন নেটওয়ার্ককে বলেছেন যে এটি উভয় পক্ষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক।
তিনি বলছেন "শি জিনপিং সাম্প্রতিককালে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পাওয়ার কংগ্রেস থেকে আরও পাঁচ বা সম্ভবত ১০ বছরের জন্য ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন এবং তিনি চীনের ম্লান অর্থনীতি থেকে পার্টির বৈধতা পরিবর্তন করেছিলেন এবং তিনি চীনকে প্রতিকূল বিশ্ব থেকে নিরাপদ রাখতে জোর দিয়ে চলেছেন। তাই সম্প্রতি শি জিনপিংয়ের অধীনে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ব্যাপকভাবে উন্নত হয়েছে।"
মি. ক্যালিক বলেন, সেই প্রেক্ষাপটে শি জিনপিংয়ের সাথে একটি বৈঠকের পরোক্ষ প্রভাব রয়েছে যা ভবিষ্যতের আলোচনার ক্ষেত্র তৈরী করতে পারে।
ইন্দোনেশিয়ায় জি-২০ গালা ডিনারের সময় দুই নেতার দ্বিতীয় আরও একটি অনানুষ্ঠানিক কথোপকথন হয়েছে বলে খবর রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজি, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং তার স্ত্রী মাদাম পুং লি ইওএন এর মধ্যে চার মিনিটের আলোচনাকে 'উষ্ণ আলোচনা' হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
যদিও এই আপাত কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন করে জাগানোর চেষ্টা এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক ফলাফল দেয়নি, তবে এটি অস্ট্রেলিয়া-চীন সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায়ের পথ প্রশস্ত করবে কিনা তা কেবল সময়ই বলে দেবে।
প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার 


















