যাদের লিঙ্গ পরিচয় জন্মের সময় নিবন্ধিত লিঙ্গ পরিচয়ের সাথে মেলে না, বা যারা ট্রান্সজেন্ডার বলে পরিচিত, তাদের সাথে অনেক সময় বৈষম্য দেখা যায়।
প্রফেসর নিকোল অ্যাসকুইথ, টাসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ক্রিমিনোলজিস্ট।
তিনি বলছেন, ট্রান্স এবং বৈচিত্রময় লিঙ্গের মানুষরা, ঘরের দরজা খোলার সাথে সাথেই অন্যদের দৃষ্টিভঙ্গি, মনোভাব নিয়ে লড়াই করতে বাধ্য হন। তাই, কেবলমাত্র বাইরে বেরোনোটাই অনেক সময় ভয়ংকর অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে।
প্রফেসর অ্যাসকুইথ বলেন, এখন যেহেতু ট্রান্সজেন্ডার মানুষরা জনসমক্ষে আরও দৃশ্যমান, তাই তারা ঘৃণাজনিত অপরাধের শিকার হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি।
এই বছরের জানুয়ারিতে, কুইন্সল্যান্ড সরকার ১৮ বছরের নিচে নতুন ট্রান্স রোগীদের জন্য সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় পিউবার্টি ব্লকারস (puberty blockers) এবং জেন্ডার এফারমিং হরমোনস (gender-affirming hormones) প্রেসক্রাইব করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
এগুলো এমন চিকিৎসা বা ওষুধ, যা কিশোর-কিশোরীদের শরীরে কৈশোরের সময় ঘটে যাওয়া শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন সাময়িকভাবে থামিয়ে দেয় বা বিলম্বিত করে এবং জন্মের সময় নির্ধারিত লিঙ্গ যাতে ঠিক রাখতে ব্যবহৃত হয়।
ড. এলোইজ ব্রুক, অস্ট্রেলিয়ান প্রফেশনাল এসোসিয়েশন ফর ট্রান্স হেলথ (Australian Professional Association for Trans Health)-এর সিইও।
তিনি বলছেন, ট্রান্সজেন্ডার মানুষের জন্য চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে অনেক ক্ষতিকর ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।
এই ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে সরাসরি কাজ করেছেন ড. ক্লারা টাক মেং সু, যিনি ক্যানবেরাভিত্তিক একজন জিপি।
তিনি বলছেন, অনেক বাবা-মা বলেন, আমার মনে হয় আমার সন্তান ট্রান্সজেন্ডার হয়েছে, কারণ তারা সামাজিক পরিবেশের প্রভাবের শিকার। আমি মনে করি এটি সম্পূর্ণ ভ্রান্তিকর। প্রথমত, কোনো প্রমাণ নেই যে ট্রান্সজেন্ডার বন্ধু থাকার কারণে কারো লিঙ্গ পরিচয় তৈরি হয়। লিঙ্গ পরিচয় এতটাই অন্তর্নিহিত যে, তিন বা চার বছরের বাচ্চারা নিজেরাই জানে তারা কোন লিঙ্গের।
ক্লারা বলেন, অভিবাসী পরিবারের অনেক ট্রান্সজেন্ডার মানুষ পরিবারের অসহিষ্ণুতার মুখে পড়েন, কারণ তাদের পরিবার বিশ্বাসই করতে চায় না যে ট্রান্সজেন্ডার হওয়া সম্ভব।
আমাদের অস্তিত্ব সর্বত্র ছড়িয়ে আছে। নাম ভিন্ন হতে পারে, ‘ট্রান্সজেন্ডার’ বলা নাও হতে পারে, কিন্তু আমরা আছি এবং থাকবো।
কিম মালয়েশিয়া থেকে আগত একজন ট্রান্সজেন্ডার পুরুষ, তিনি এমন সব ঘটনার সাথে পরিচিত।
তিনি বলছেন, অনেক কিছু আমাকে বলা হয়েছিল যখন আমি নিজেকে প্রকাশ করছিলাম, যেমন ট্রান্সজেন্ডার হওয়া নাকি পুরোপুরি পশ্চিমা বিষয়। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে আমি বুঝলাম, আমরা এশীয় সংস্কৃতির সর্বত্রই বিদ্যমান। যেমন ভারতে হিজড়া, ইন্দোনেশিয়ায়, আমাদের ব্রাদার বয়েজ এবং সিস্টার গার্লস, সামোয়ান এবং নিউজিল্যান্ডের মাওরি সংস্কৃতিতে ফা'ফাফিনে বলা হয়। আমরা আসলে সর্বত্রই আছি। শুধু “transgender” শব্দটা ব্যবহার হয় না, কিন্তু আমরা সব সংস্কৃতিতেই আছি।
এসবিএস এক্সামিনস থেকে আন্ডারস্ট্যান্ডিং হেইটের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে ট্রান্সফোবিয়া বা ট্রান্সজেন্ডার মানুষদের প্রতি ভীতি বা বিদ্বেষের প্রভাব নিয়ে।
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
এসবিএস বাংলা এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেলের অংশ।
এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুন প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে। এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে। ভিজিট করুন www.sbs.com.au/bangla.
আর, এসবিএস বাংলার পডকাস্ট এবং ভিডিওগুলো ইউটিউবেও পাবেন। ইউটিউবে সাবসক্রাইব করুন এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেল। উপভোগ করুন দক্ষিণ এশীয় ১০টি ভাষায় নানা অনুষ্ঠান। আরও রয়েছে ইংরেজি ভাষায় এসবিএস স্পাইস।