‘সোশ্যাল কোহেশন’ বা সামাজিক সংহতি—এ শব্দগুচ্ছ আজ রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে খুবই পরিচিত। বহু দিক থেকে আমরা শুনছি, সামাজিক সংহতি নানাভাবে চাপে রয়েছে—বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব থেকে শুরু করে অর্থনীতি পর্যন্ত।
তাহলে, সামাজিক সংহতি আসলে কী? অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ডেমোগ্রাফার ড. জেমস ও’ডনেল বলছেন,“আমরা কিভাবে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত থাকি, সেই সামগ্রিক সম্প্রীতি, সহযোগিতা, আস্থা ও অন্তর্ভুক্তির অনুভূতি—এবং সাধারণ কল্যাণের জন্য আমরা কতটা সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকি—এসবই সামাজিক সংহতির অংশ।”
সম্প্রতি সারা দেশে কিছু সমাবেশ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ভীতি সৃষ্টি করেছে এবং কিছু ক্ষেত্রে সহিংসতাও ঘটেছে।
প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজি বলেন “এগুলো ছিল আমাদের সমাজের সংহতি দুর্বল করার এবং বিভেদ ছড়ানোর চেষ্টা।”
এ বিষয়ে বলছেন ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ও ডানপন্থী উগ্রবাদ–বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মারিও পয়কার বলছেন, “প্রতিটি মানুষই চায় তার মূল্য থাকুক, তাকে সম্মান করা হোক, তাকে স্বীকৃতি দেওয়া হোক। কিন্তু যখন সমাজের বড়, এবং ক্রমবর্ধমান, অংশ মনে করে তাদের মতামত গুরুত্ব পায় না, তাদের দৃষ্টিভঙ্গি উপেক্ষা করা হয়, তাদের কণ্ঠ শোনা হয় না—তখনই উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলো সেই মানবিক চাহিদাগুলো পূরণের ভান করে মানুষকে প্রলুব্ধ করতে পারে।”
ড. পয়কার বলেন, স্বেচ্ছাসেবী ও কমিউনিটি গ্রুপে যুক্ত থাকা সাম্প্রতিক সময় দেখা দেওয়া সহিংস ও ক্রোধপূর্ণ মেরুকরণ প্রতিরোধে বাস্তব ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রতিটি মানুষই চায় তার মূল্য থাকুক, তাকে সম্মান করা হোক, তাকে স্বীকৃতি দেওয়া হোক।
মেলবোর্নের ক্যারি এন্ড কানেক্ট (Carry and Connect) নামে একটি কমিউনিটি গ্রুপ পরিচালনা করেন উইলেম ভ্যান জান্টেন।
প্রতি শনিবার সকালে পুরুষেরা একসঙ্গে কয়েক কিলোমিটার হাঁটেন পিঠে বালুর বস্তা আর হাতে ডাম্বেল নিয়ে। তবে এই দলটি শুধু ব্যায়ামের জন্য নয়।
উইলেম বলছেন, “হাঁটার সময় আমরা একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত হই। ওজন নিয়ে হাঁটা ও কথোপকথনের মাধ্যমে অনেকটা চাপ কমে যায়। সবাই নিজের জীবনের চ্যালেঞ্জগুলো ভাগ করতে পারে।”
এই গ্রুপটি নানা বয়স, পটভূমি ও জীবনের অভিজ্ঞতার মানুষকে এক ধরনের সম্প্রদায়ের অনুভূতি ও সমর্থন দিয়েছে, যা অনেকেরই আগে ছিল না।
উইলেম বলেন, সমাজে আস্থা গড়ে তুলতে স্থানীয় ঘনিষ্ঠ কমিউনিটির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হলেও, এটি পুরো প্রক্রিয়ার একটি অংশ মাত্র।
উইলেম আরও বলেন, তাদের ফিটনেস গ্রুপের একটি বড় শক্তি হলো, এটি সব বয়স, সাংস্কৃতিক পটভূমি ও সক্ষমতার মানুষকে স্বাগত জানায়।
এই সিরিজে আমরা বহু বিশেষজ্ঞ ও কমিউনিটি নেতার কাছ থেকে ঘৃণার বিস্তার নিয়ে উদ্বেগের কথা শুনেছি।
বিভাজনের দিকে তাকালে পৃথিবী অন্ধকার মনে হতে পারে। কিন্তু মনে রাখা দরকার, এখানে এমন অনেক ইতিবাচক গল্পও আছে যেখানে মানুষ সংস্কৃতিগত ব্যবধান দূর করতে একসঙ্গে কাজ করছে, সম্প্রীতি গড়ে তুলছে।
অস্ট্রেলিয়ায় বৈচিত্র্য ও বহু–সংস্কৃতিকে সমর্থনের হার এখনো উঁচু, এবং মানুষ একে অপরের জন্য নজর রাখছে, যা আশাবাদের যথেষ্ট কারণ।
এসবিএস এক্সামিন্স থেকে আন্ডারস্ট্যান্ডিং হেইট সিরিজের শেষ পর্বে আমরা খুঁজছিকীভাবে আমরা বিভাজন রোধ করতে পারি এবং সামাজিক সংহতি রক্ষা করতে পারি।
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
এসবিএস বাংলার আরও পডকাস্ট শুনতে ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট।আপনি কি জানেন, এসবিএস বাংলা অনুষ্ঠান এখন ইউটিউব এবং এসবিএস অন ডিমান্ডে পাওয়া যাচ্ছে?
এসবিএস বাংলা এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেলের অংশ।এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুন প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে।
এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে। ভিজিট করুন www.sbs.com.au/bangla.আর, এসবিএস বাংলার পডকাস্ট এবং ভিডিওগুলো ইউটিউবেও পাবেন।
ইউটিউবে সাবসক্রাইব করুন এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেল। উপভোগ করুন দক্ষিণ এশীয় ১০টি ভাষায় নানা অনুষ্ঠান। আরও রয়েছে ইংরেজি ভাষায় এসবিএস স্পাইস।









