"যখন আমরা সেই ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম, যারা আমাদের ভয়াবহ কিছু অভিজ্ঞতার কথা বলেছিল, আমরা জিজ্ঞেস করেছিলাম, 'তোমরা কি এসব বাবা-মাকে বলো?' তারা বলেছিল, 'কখনোই না। আমাদের বাবা-মা নিজেরাই অনেক কিছুর সঙ্গে লড়ছে। আমি কেন তাদের উপর আরও বোঝা চাপাব, যেখানে তারা কিছুই করতে পারবে না?' - এ কথাগুলো বলছেন নর শানিনো, যিনি উবুন্টু প্রজেক্ট নামের এক অলাভজনক সংগঠনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা।
এসবিএস এক্সামিনসের এই সিরিজে আমরা বর্ণবৈষম্যের কারণ এবং এর ব্যক্তিগত ও সামাজিক ক্ষতির দিকগুলো নিয়ে কথা বলেছি।
নর শানিনো বলছেন, “১৫–১৬ বছরের এক তরুণকে যখন বর্ণবৈষম্যের এমন মানসিক ভার বইতে হয়, যার কথা আমরা কখনো বলার সুযোগই পাই না... এটা সব সময়ই একটা বোঝা, একধরনের অতিরিক্ত চাপ।”
নর শানিনো বলেন, তরুণ বয়সে বর্ণবৈষম্যের শিকার হওয়াটা তাঁকে এবং তাঁর অনেক সহকর্মীকেই কমিউনিটি বা সামাজিক কাজে যুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করেছে।
নর বলেন, মাত্র এক প্রজন্মের ব্যবধানে তাঁর সম্প্রদায়ের মধ্যে বর্ণবৈষম্য সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশাল পরিবর্তন এসেছে।
টিগিস্ট কেহ-বিডি একজন ট্রমা কাউন্সেলর, যিনি আফ্রিকান-অস্ট্রেলীয় তরুণদের সঙ্গে কাজ করেন।
তিনি একমত যে আফ্রিকান ডায়াস্পোরা সম্প্রদায়ের মানুষরা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বর্ণবৈষম্যের প্রভাব ভিন্নভাবে অনুভব করেছেন—এবং এটা এখনও পরিবর্তিত হচ্ছে।
টিগিস্ট বলছেন,“লিঙ্গ, শ্রেণি, ধর্ম, অভিবাসন-অবস্থা, আগমনের পথ, ত্বকের রঙ, এসব বিষয় প্রভাব ফেলে কেউ কীভাবে বর্ণবৈষম্য অনুভব করে এবং তার প্রতিক্রিয়া জানায়। আগের প্রজন্মগুলো সাধারণত আইন বা প্রকাশ্য বৈষম্যের মতো প্রকাশ্য ও প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবৈষম্যের মুখোমুখি হয়েছে। কিন্তু তরুণ প্রজন্ম মূলত সূক্ষ্ম ও প্রতিদিনকার বৈষম্যের অভিজ্ঞতা জানায়।”
টিগিস্ট বলেন, এই প্রজন্মগত পার্থক্যগুলো এখন ধীরে ধীরে এক বিন্দুতে মিলছে। কারণ অভিবাসনবিরোধী মনোভাব ও প্রকাশ্য বর্ণবৈষম্য আবার বেড়ে যাচ্ছে।
রোবিয়েল আব্রাহাম আসপিয়া ফাউন্ডেশন নামের তরুণদের নেতৃত্বাধীন এক অলাভজনক সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা।
রোবিয়েল বলছেন,“আমরা তরুণদের সঙ্গে বয়োজ্যেষ্ঠ প্রজন্মের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করার চেষ্টা করি। আমাদের অনেক কাজ হলো কমিউনিটির অভিজ্ঞ সামাজিককর্মীদের সঙ্গে তরুণদের সংযোগ ঘটানো। আমরা এমন তথ্য তাদের কাছে পৌঁছে দিই, যা তরুণরা হয়তো সরাসরি বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না।”
রোবিয়েল বলেন, ভিন্ন প্রজন্ম একে অপরকে মূল্যবান সহায়তা দিতে পারে বর্ণবৈষম্যের মোকাবিলায়, এবং তিনি চান এই সহযোগিতা আরও বাড়ুক।
যেসব তরুণ অনলাইন জগতের নানা সংস্কৃতি ও ধারণার ভেতর দিয়ে বেড়ে উঠছে, তাদের সঙ্গে পুরোনো প্রজন্মের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য থাকা স্বাভাবিক।
রোবিয়েল বলেন, বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত থাকারও কিছু ইতিবাচক দিক আছে, যেমন অনুপ্রেরণা পাওয়া, আশাবাদী হওয়া।
প্রজন্মগুলোর মধ্যে একটি সেতুবন্ধন গড়ে উঠেছে।
রোবিয়েল বলছেন,“এই সংযুক্তির একটি দিক হলো সারা বিশ্বের আফ্রিকান ডায়াস্পোরার অভিজ্ঞতা শোনা, এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য বা অন্যত্র বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে তাদের সম্মিলিত প্রতিক্রিয়া থেকে শেখা। এর ফলেই আমাদের কমিউনিটির মধ্যে এক সাহসী, দৃঢ়, ও স্থিতিশীল তরুণ প্রজন্মের জন্ম হয়েছে।”
এসবিএস এক্সামিনসের এই সিরিজে আমরা বর্ণবৈষম্যের কারণ এবং এর ব্যক্তিগত ও সামাজিক ক্ষতির দিকগুলো নিয়ে কথা বলেছি। 'আন্ডারস্ট্যান্ডিং হেইট'-এর এই পর্বে আমরা আলছনা করেছি কীভাবে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মানুষরা নিজেদের সম্প্রদায়ের ভেতর এবং প্রজন্মের মধ্যে বর্ণবৈষম্যের বিষয়টি মোকাবিলা করছেন।
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন।
এসবিএস বাংলা এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেলের অংশ।
এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুন প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে। এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে। ভিজিট করুন www.sbs.com.au/bangla.
আর, এসবিএস বাংলার পডকাস্ট এবং ভিডিওগুলো ইউটিউবেও পাবেন। ইউটিউবে সাবসক্রাইব করুন এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেল। উপভোগ করুন দক্ষিণ এশীয় ১০টি ভাষায় নানা অনুষ্ঠান। আরও রয়েছে ইংরেজি ভাষায় এসবিএস স্পাইস।










