কন্টেন্ট সতর্কতা: এই পর্বে এমন কিছু ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে যা অনেকের কাছে আপত্তিকর মনে হতে পারে।
১৯৭৫ সালে যখন এসবিএস চালু করা হয়, তখন সিডনিতে 2EA এবং মেলবোর্নে 3EA নামে দুটি কমিউনিটি রেডিও স্টেশন হিসেবে এটি পরিচিত ছিল। কমিউনিটি ভাষাগুলোর মধ্যে প্রথমদিকের সম্প্রচারিত দুটি ভাষা হচ্ছে গ্রিক এবং ইতালীয়। এই দুটি ভাষাই অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘতম প্রতিষ্ঠিত দুটি অভিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে।
তবে এই সম্প্রদায়গুলি অনেক ধরনের বৈষম্যের সম্মুখীন হতো, যার মধ্যে অন্যতম ছিল তাদের 'ওঅগ' নামে ডাকা। অস্ট্রেলিয়ায় 'ওঅগ' হচ্ছে একটি বর্ণবাদী শব্দ যা সাধারণত ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের লোকেদের উল্লেখ করে ব্যবহৃত হয়।
অনেকেই এখনও এটিকে বর্ণবাদী হিসেবেই বিবেচনা করে, কিন্তু অনেকেই আবার এই শব্দটিকে গৌরবের সাথে নিজের পরিচয় দিতে, অথবা স্নেহের শব্দ হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেছে।
আদ্রিয়ানোস কাজাস ১৯৫৯ সালে যুদ্ধ থেকে পালিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান। তখন তার বয়স ছিল ২৪।
তিনি বলেন,
অভিবাসীদের সম্পর্কে তখন বেশ কিছু নেতিবাচক ধারণা প্রচলিত ছিল, কিন্তু তাকে বৈষম্যের শিকার হতে হয়নি।
পিটার ক্যাথোলোস ছিলেন গ্রিক বংশোদ্ভূত প্রথম ব্যক্তি যিনি সকারু হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। তার পরিবার ১৯৭০ সালে নৌকায় করে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে, ভারত মহাসাগরে ৩০ দিন ধরে তারা এই নৌকায় অবস্থান করেছিলেন। তখন তার বয়স ছিল নয় বছর এবং তিনি ইংরেজি বলতে পারতেন না।
এখন তাহলে জানা যাক 'ওঅগ' শব্দটি কোথা থেকে এসেছে এবং কেন এটিকে আপত্তিকর বলে মনে করা হয়।
অ্যান্ডোনিস পিপেরোগ্লু মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল ডায়াস্পোরা বিষয়ে হেলেনিক সিনিয়র লেকচারার, তিনিও একজন গ্রিক অস্ট্রেলিয়ান।
যদিও এখনও এটিকে বর্ণবাদী ডাক হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তবুও অনেকেই এই শব্দটির অর্থ নতুন করে গ্রহণ করছেন এবং গর্বের সাথে নিজেকে ওঅগ হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন।
কৌতুকাভিনেতা অ্যান্থনি লোকাসিওর মা হলেন গ্রিক এবং বাবা ইতালীয়। তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রজন্মের মানুষেরা ভিন্নভাবে বৈষম্যের অভিজ্ঞতা পেয়ে থাকেন।
অ্যান্থনি তার স্ট্যান্ডআপ কমেডিতে নিজের জাতিগত পটভূমির বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করেন।
ট্রিপল জে ব্রেকফাস্ট রেডিওর উপস্থাপক কনচেটা কারিস্তোর পূর্বপুরুষদের তিনজন ইতালিতে জন্মগ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, নিজেকে ওঅগ বলে পরিচয় দিতে পেরে তিনি গর্বিত।
কনচেটা পেরনা হলেন ন্যাশনাল ইতালিয়ান অস্ট্রেলিয়ান উইমেন'স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং নারী অভিবাসন নিয়ে অধ্যয়নরত একজন শিক্ষাবিদ।
তিনি বলেন, প্রতিটি প্রজন্মের একটি অনন্য সাংস্কৃতিক পরিচয় রয়েছে তবে তিনি বিশ্বাস করেন যে যারা প্রথম অস্ট্রেলিয়ায় এসেছিলেন তাদের সন্তানরা সবচেয়ে বেশি সংগ্রাম করেছে।
তিনি বছরের পর বছর ধরে ম্যাককোয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইতালীয় ভাষা শেখানোর কাজ করেছেন। এ কাজে দ্বিতীয় প্রজন্মের অনেক অভিবাসীদের সাথে তার সাক্ষাৎ ঘটে, যাদের অনেকেই ইতালীয় বংশধর।
অ্যান্থনি জানেন কীভাবে লজ্জা বা সংকোচ একটি পরিবারের প্রতিটি প্রজন্মকে প্রভাবিত করতে পারে।
তার দাদু তার জন্য একজন আদর্শ মানুষ ছিলেন, কিন্তু যখন তিনি কমেডি্কে পেশা হিসেবে নেয়ার স্বপ্ন দেখেন, তখন তার দাদু তাকে নিরুৎসাহিত করেছিলেন।
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।