মূল বিষয়
- শখের বশে মাছধরার নিয়ম স্টেট ও টেরিটরিভেদে আলাদা হতে পারে। এগুলো অনলাইনে পাওয়া যায়, এবং সহায়তার জন্যে বিভিন্ন সরকারি অ্যাপও রয়েছে।
- নিয়ম ভঙ্গের ক্ষেত্রে কড়া জরিমানা হতে পারে, আর নিরাপত্তা বিধি না মানলে জীবনের ঝুঁকিতে পড়তে হতে পারে।
- ফিশিং বা মাছ ধরতে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার সংস্কৃতির অংশ, এবং এর সঙ্গে আসে দায়িত্বশীলভাবে মাছ ধরা এবং এসব স্থানগুলোকে পরিচর্যা করা।
পরিসংখ্যান বলছে অস্ট্রেলিয়ায় প্রতি পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে অন্তত একজন প্রতি বছর মাছ ধরতে যান। নদীর ধারে, সমুদ্রতটে বা নৌকা থেকে ছিপ ফেলা—যেভাবেই হোক না কেন, মাছ ধরা শুধু শখ নয়, এটি অস্ট্রেলিয়ার সংস্কৃতিরই অংশ।
তবে অনেক নতুন অভিবাসী যে বিষয়টি বুঝতে পারেন না, তা হলো—অস্ট্রেলিয়ায় মাছ ধরার জন্য কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে, আর সেগুলো মানা জরুরি। আপনি যে স্টেট বা টেরিটরিতে আছেন, তার ওপর নির্ভর করে নিয়ম ভিন্ন হতে পারে—যেমন কোথাও মাছ ধরতে লাইসেন্স লাগে, কোথাও লাগে না; কিছু এলাকায় মাছ ধরা নিষিদ্ধ, আবার কিছু মৌসুমে মাছ ধরা বন্ধ থাকে।
এছাড়াও নিরাপত্তা, আবর্জনা ফেলা ও মাছ ধরার পরবর্তী প্রক্রিয়া সঠিকভাবে করার মতো বিষয়েও নির্দিষ্ট নিয়ম ও চর্চা অনুসরণ করতে হয়।

Nin gadanaya xadhigga kalluumaysiga Credit: aywan88/Getty Images
২০২৩ সালে প্রকাশিত অস্ট্রেলিয়ান সরকারের এক বৃহৎ গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি বছর প্রায় ৪.২ মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ মাছ ধরতে যান।
ফিশারিজ বিজ্ঞানী অ্যান্ডি মুর সর্বশেষ জাতীয় পর্যায়ের বিনোদনমূলক মাছধরা সংক্রান্ত জরিপটি পরিচালনা করেছেন। তিনি বলেন, সংখ্যার দিক থেকে তেমন পরিবর্তন না এলেও এর পেছনের গল্পটা কিন্তু বদলে গেছে।
মি. মুর আরও উল্লেখ করেন যে, অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যার চেহারাও বদলাচ্ছে—বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত পটভূমির মানুষ এখন ক্রমেই মাছধরাকে শখ হিসেবে আপন করে নিচ্ছেন।

Some rock fishing sites alert the public to the dangers and enforce safety measures. Source: Moment RF / Simon McGill/Getty Images
তিনি বলেন, প্রতিটি রাজ্য বা অঞ্চলের নিজস্ব কিছু নিয়ম রয়েছে—যেমন কতগুলো মাছ ধরা যাবে, তাদের ন্যূনতম আকার কী হবে, কিংবা কোন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা যাবে।
তার ভাষায়, এই পার্থক্যগুলো কখনও কখনও বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়।

Penalties for severe fishing offences include fines or even imprisonment. Credit: SteveLuker/Getty Images
- Northern Territory
- South Australia
- New South Wales
- Western Australia
- Victoria
- Tasmania
- Australian Capital Territory
- Queensland
মাছ ধরার নিয়মকানুন অনলাইনে খুব সহজেই পাওয়া যায়, আর বেশিরভাগ স্টেটেরই অনুবাদসহ সরকারি অ্যাপও রয়েছে। তবে যদি আপনি একদম নতুন হয়ে থাকেন, তাহলে প্রথমে স্থানীয় মাছ ধরার সরঞ্জামের দোকানে যাওয়াই হতে পারে সবচেয়ে ভালো শুরু।
মি. কনস্টানতারাস ব্যাখ্যা করেন, 
স্থানীয় এসব ট্যাকল শপ কেবল দোকান নয়—এগুলো আসলে পরামর্শ ও নিরাপত্তা শেখার একধরনের কমিউনিটি কেন্দ্র।
লাইসেন্সের নিয়ম একেক স্থানে একেক রকম। কিছু রাজ্যে—যেমন সাউথ অস্ট্রেলিয়া, কুইন্সল্যান্ড এবং নর্দার্ন টেরিটরিতে—মাছ ধরার জন্য কোনো লাইসেন্সের দরকারই নেই। অন্য রাজ্যগুলোতে এটি সস্তা এবং সহজেই পাওয়া যায়। শুধু মনে রাখবেন—লাইসেন্স কিনতে হবে কেবল সরকারি ওয়েবসাইট থেকেই।
ভিক্টোরিয়ান ফিশারিজ অথরিটির সিইও ট্রাভিস ডাউলিং সতর্ক করে বলেন, তৃতীয় পক্ষের কিছু ওয়েবসাইট প্রতারণা করে বেশি টাকা নিচ্ছে—এ ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে।
READ MORE

#50 Let's go fishing! (Med)
যারা নিয়ম ভঙ্গ করেন, তাদের বেশিরভাগই তা ইচ্ছে করে করেন না—অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেটা ভুলবশত ঘটে। তাই আপনার সরঞ্জাম ঠিকঠাক আছে কিনা এবং কী কী করা যায় বা যায় না, তা ভালোভাবে জেনে নেওয়াই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, বলেন মি. ডাউলিং।
উদাহরণস্বরূপ, আপনার মাছ ধরার সরঞ্জাম যেন স্থানীয় নিয়মের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়—এ বিষয়টি নিশ্চিত করাও খুব জরুরি।

Learn how First Nations rights to fish are recognised in your state’s fisheries laws. Credit: Rafael Ben-Ari/Getty Images
গত ২০ বছর ধরে নিউ সাউথ ওয়েলসের রেক্রিয়েশনাল ফিশিং অ্যালায়েন্স রক ফিশিং নিরাপত্তা নিয়ে নানা প্রচারণা চালিয়ে আসছে।
মি. কনস্টানতারাস জানান, সাধারণত অভিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ এই ক্ষেত্রে বিশেষভাবে ঝুঁকির মুখে পড়েন।

My sister holding a little fish in her hands with some other children at the Wharf in port Macquarie Source: Moment RF / Clint Mcmanus/Getty Images
তবে মি. কনস্টানতারাস সতর্ক করে বলেন, 
যদি ঢেউ বিপজ্জনক দেখায়, তাহলে ঝুঁকি না নেয়াই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।
শেষ করার আগে, অস্ট্রেলিয়ার যেকোনো জায়গায় মাছ ধরার জন্য প্রত্যেকের অন্তত এই দুইটি নিয়ম মনে রাখা উচিত: দায়িত্বশীল হতে হবে এবং নিরাপত্তাবিধি মানতে হবে।
মি. ডাউলিং ব্যাখ্যা করে বলেন, ছোট ছোট কাজ—যেমন মাছ ধরার সময় সতর্ক থাকা এবং আবর্জনা না ফেলা—পরিবেশ ও মাছধরার ভবিষ্যৎ অভিজ্ঞতা সুন্দর করতে সাহায্য করতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ায় আপনার নতুন জীবনে স্থায়ী হওয়ার বিষয়ে আরও মূল্যবান তথ্য এবং টিপসের জন্য ‘অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কে জানুন’ পডকাস্ট অনুসরণ করুন।
আপনার কোনো প্রশ্ন বা নতুন কোনো বিষয় নিয়ে আমাদের পডকাস্টে শুনতে চাইলে  australiaexplained@sbs.com.au  -এ আমাদের ইমেল করুন।










