কোন মুহূর্তে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে তা বোঝা কঠিন হতে পারে। কাউকে সহায়তা করতে চাইলে কীভাবে করবেন, এটা অনেকেই বুঝতে পারেন না।
আর আন্ডারস্ট্যান্ডিং হেইটের এই পর্বে আমরা ঘৃণার স্বরূপ বোঝার চেষ্টা করব, এবং হয়রানি বা ঘৃণার ঘটনা ঘটলে কখন আমাদের এগিয়ে আসা উচিত তা বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করব।
কোভিড-১৯ মহামারির চূড়ান্ত সময়ের পর, অ্যারন জনসমক্ষে একটি বর্ণবাদী হামলার সাক্ষী হয়েছিলেন।
"আমি বাসায় ফিরছিলাম এবং ট্রাফিক সিগন্যালে গাড়ি থামালাম। লাইট লাল ছিল, আর আমি দেখলাম একজন এশীয় সাইকেল আরোহী একটি গাড়ির পাশে। বুঝতে পারলাম কিছু কথাবার্তা হচ্ছে। আর তাদের মধ্যে বাদানুবাদ দ্রুতই তীব্র হয়ে উঠলো। গাড়ির চালক, একজন শ্বেতাঙ্গ পুরুষ, খুব আক্রমণাত্মকভাবে গাড়ি থেকে নেমে এলেন।
“তাৎক্ষণিক চিন্তা ছিল পরিস্থিতি শান্ত করা এবং হামলাকারী ও ভুক্তভোগীর মধ্যে কিছুটা শারীরিক দূরত্ব তৈরি করা। ভাগ্যক্রমে আমি এগিয়ে যাওয়ার পর আরও কয়েকজন মানুষ জড়ো হলেন এবং অপরাধীর সামনে দাঁড়িয়ে সহায়তা করলেন,” তিনি বলেন।
ট্যাকলিং হেইট ল্যাব থেকে ডক্টর হেইলি ট্রান বলেন, "যখন মানুষ এগিয়ে আসে, তখন একটা পার্থক্য তৈরি হয়। হস্তক্ষেপ হয়তো সম্পূর্ণভাবে ঘৃণাকে থামাতে পারে না, কিন্তু মুহূর্তটিকে ব্যাহত করে এবং এটি স্পষ্ট বার্তা দেয় যে ঘৃণামূলক আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়।"
তিনি বলেন, মানুষ তাদের সুবিধা অনুযায়ী বিভিন্নভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে।
একটি উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনায়, আমাদের মনোযোগ ও শক্তি সহজেই অপরাধীর দিকে চলে যেতে পারে। কিন্তু ভুক্তভোগীকে সাহায্য করা আসলে সবচেয়ে গঠনমূলক কাজগুলোর একটি।
আমরা জানি, মানুষ সবসময় আওয়াজ তোলে না বা হস্তক্ষেপ করে না, এমনকি তারা জানলেও যে এটি সঠিক কাজ।
এখানে পশ্চিম সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রফেসর কেভিন ডান বলছেন, "এই ক্ষেত্রে মানুষের আকাঙ্ক্ষা আর তাদের বাস্তব কর্মের মধ্যে একটি ফাঁক রয়েছে। যখন জরিপে মানুষকে জিজ্ঞেস করা হয় তারা পদক্ষেপ নেবে কি না, তখন প্রায় সত্তর শতাংশ বা তারও বেশি ইতিবাচক উত্তর দেয়। কিন্তু একই মানুষকে যখন জিজ্ঞেস করা হয় তারা কখনও এমন পদক্ষেপ নিয়েছে কি না, তখন সংখ্যাটা নেমে আসে চল্লিশ শতাংশের নিচে, এমনকি তিরিশ শতাংশেরও নিচে।"
তাহলে কেন আমাদের আকাঙ্ক্ষা আর কর্মের মধ্যে এত ফারাক?
প্রফেসর ডান বলছেন, ঘৃণামূলক কোনো ঘটনার নীরব দর্শক হওয়া একটি কঠিন অভিজ্ঞতা হতে পারে, যদিও আপনি সরাসরি লক্ষ্যবস্তু নন।
ডক্টর হেইলি ট্রান বলেন, এমন ঘটনা ধাতস্থ করার জন্য সময় নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
প্রফেসর ডান বলেন, আমাদের আকাঙ্ক্ষা আর কার্যকলাপের মধ্যকার এই ফারাক হলো “অব্যবহৃত সম্ভাবনা, যা আমরা বর্ণবাদবিরোধী উদ্দেশ্যে কাজে লাগাতে পারি—যদি আমরা মানুষকে বোঝাতে পারি … তারা কী কী ভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে।”
‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং হেইট’-এর এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে, আমরা কীভাবে নিরাপদে হস্তক্ষেপ করতে পারি—যদি কোনো হয়রানি বা ঘৃণার ঘটনা আমাদের সামনে ঘটে।
সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।
এসবিএস বাংলা এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেলের অংশ।
এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুন প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে। এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে। ভিজিট করুন www.sbs.com.au/bangla.
আর, এসবিএস বাংলার পডকাস্ট এবং ভিডিওগুলো ইউটিউবেও পাবেন। ইউটিউবে সাবসক্রাইব করুন এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেল। উপভোগ করুন দক্ষিণ এশীয় ১০টি ভাষায় নানা অনুষ্ঠান। আরও রয়েছে ইংরেজি ভাষায় এসবিএস স্পাইস।